
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা আজ সোমবার শেষ হচ্ছে। প্রচারণার শেষ দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, হল-কটেজ ও ঝুপড়িতে ভোটারদের কাছে টানতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। আগামী বুধবার চাকসু ও হল সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী, আজ রাত ১২টা পর্যন্ত প্রচারণা চালাতে পারবেন প্রার্থীরা।
সকালে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রার্থীরা শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে প্রচারপত্র তুলে দিয়ে নিজেদের জন্য ভোট চাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতেও দেখা যায় তাঁদের। বিশ্ববিদ্যালয়ের দোকানপাট-ঝুপড়িও চাকসু নির্বাচন নিয়ে আলোচনায় মুখর। শিক্ষার্থীদের অনেকে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে তর্ক-বিতর্কে সময় কাটাচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাওল হলে প্রচারণা করছিলেন হল সংসদের ভিপি প্রার্থী রাকিবুল বশর। তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত হলে আমি কী কী করব, তা ভোটারদের কাছে তুলে ধরছি। ভোটারদের জানিয়েছি, নির্বাচিত হলে হলের খাবারের মানোন্নয়ন, মাঠ সংস্কার, ইন্টারনেট–সুবিধা নিশ্চিতের পাশাপাশি আসন বরাদ্দে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করব। শিক্ষার্থীরা ভালোই সাড়া দিচ্ছেন। তাঁরা চান, ভোটের পরও যাতে প্রার্থীরা তাঁদের পাশে থাকেন।’
অতীশ দীপঙ্কর হলে কথা হয় নবদিগন্ত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী বিপুল চাকমার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আবাসিক শিক্ষার্থীদের কক্ষে গিয়ে এবং অনাবাসিকদের সঙ্গে বিভাগে গিয়ে যোগাযোগ করছি।’
শাহ আমানত হলে গিয়ে নাইমুর রশিদ নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘প্রার্থীদের একেকজন কিছু সময় পরপর হলে এসে ভোট চাচ্ছেন। একই সঙ্গে নানা প্রতিশ্রুতিও তাঁরা দিচ্ছেন। আমরাও নানা বিষয়ে তাঁদের মতামত ও পরিকল্পনা জানতে চাচ্ছি।’
শহীদ ফরহাদ হোসেন হলের শিক্ষার্থী আহমেদ রাসেল বলেন, ‘প্রার্থীরা পানি ও খাবারের মানোন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে হলে শিক্ষার্থী অনেক বেশি হওয়ায় সবার কাছে কোনো প্রার্থীই পৌঁছাতে পারেননি।’ প্রার্থী ও প্যানেলের পক্ষে হলগুলোর কক্ষে প্রচারণার পাশাপাশি প্রজেকশন মিটিংও করা হচ্ছে বলে জানান অতীশ দীপঙ্কর হলের শিক্ষার্থী অনুরূপ চাকমা।
প্রীতিলতা হলে ‘সম্প্রীতি’ প্যানেলের হয়ে নির্বাহী সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছেন নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী এরিনা চাকমা। তিনি বলেন, ‘প্রচারণা শেষ দিন, তাই প্রতিটি মুহূর্ত কাজে লাগিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছি। আমরা সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে প্যানেল করেছি। জয়ী হই বা না হই, শিক্ষার্থীদের পাশে থাকব।’
প্রীতিলতা হলের শিক্ষার্থী ও আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী আইদি হোসেন বলেন, ‘প্রার্থীরা কক্ষে এসে প্রচারণা যেমন চালাচ্ছেন, একইভাবে অনলাইনেও তাঁদের প্রচারণা চলছে। প্রার্থীরা ভোটের পরও শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবেন, এটিই আমাদের চাওয়া।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী বুধবার আবার ভোট হতে যাচ্ছে। এবার মোট ভোটার প্রায় ২৭ হাজার, যার মধ্যে ছাত্রী প্রায় সাড়ে ১১ হাজার।