
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ভৈরবের বাড়ি এখন সানফ্লাওয়ার কিন্ডারগার্টেন স্কুল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জিল্লুর রহমানের বাসভবনটি স্কুল কর্তৃপক্ষকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। জিল্লুর রহমানের বংশধর মরহুম তারা মিয়ার ছেলে নইম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অংশীদার। কিন্ডারগার্ডেনের মালিক ভৈরবের প্রবীণ শিক্ষক অধ্যক্ষ আবদুল বাসেত। তার অংশীদারের সহায়তায় বাসভবনটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। তবে ভবনটির নিচতলায় স্কুল পরিচালনা করা হলেও দুতলা ভাড়া দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে কিন্ডারগার্টেন মালিক অধ্যক্ষ আবদুল বাসেতের সঙ্গে যুগান্তর প্রতিনিধির সোমবার কথা হয়। তিনি বলেন, আমার স্কুলটি ১৯৮৭ সাল প্রতিষ্ঠিত। তখন জিল্লুর রহমানের চাচাতো ভাই তারা মিয়া আমার অংশীজন ছিলেন। তিনি মারা গেছেন। এখন তার ছেলে নইম অংশীদার হিসেবে আমার সঙ্গে আছেন। নইম জিল্লুর রহমানের ওয়ারিশের কারো সঙ্গে আলাপ করে বাড়িটি ভাড়ার ব্যবস্থা করে দেন।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর বাসভবনটি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে দুর্বৃত্তরা। এটা সংস্কার করতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। ওই টাকা আমি ভাড়া থেকে কর্তন করে নেব। এভাবেই কথা হয়েছে। তবে আমি নিচতলা ভাড়া নিলেও দুতলা ভাড়া নেইনি।
আবদুল বাসেত বলেন, বাসভবনটি শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ভাল থাকবে এবং আমিও একটি ভাল বাড়ি পেলাম। এ কারণেই ভবনটি ভাড়া নিয়েছি।
এদিকে স্কুলের অংশীদার নইমের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য জিল্লুর রহমানের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। তার দুই মেয়ে আছেন, কিন্তু তারা কোথায় আছেন জানা নেই।
২০০৯ সালে দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর জিল্লুর রহমানের একমাত্র ছেলে নাজমুল হাসান পাপন কিশোরগঞ্জ-৬ আসনে সংসদ সদস্য হন ৪ বার। পাপন বিসিবি সভাপতিও ছিলেন। রাজনৈতিক কারণে পাপন মাঝেমধ্যে ভৈরবের পৈতৃক বাসায় আসা-যাওয়া করতেন। ৫ আগস্টের পর পাপনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। অনেকের ধারণা তিনি সপরিবারে বিদেশে পালিয়ে গেছেন।
জিল্লুর রহমানের জন্মস্থান শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়ায়। তিনি স্বাধীনতার পর ৫ বার কিশোরগঞ্জ-৬ ( ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসন থেকে সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাবেক সরকারের পতন হলে জিল্লুর রহমানের নিজ বাসভবনটি ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে ক্ষতিসাধান করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনার দিন ওই ভবনে কেউ ছিলেন না। এমনিতেই তার বাসায় কেউ থাকতেন না।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে জিল্লুর রহমান ঢাকায় গুলশানের নিজ বাসভবনে থাকতেন। এ কারণে তার পরিবারের সবাই গুলশানের বাসায় বসবাস করতেন। একজন কেয়ারটেকার ভৈরবের বাসভবন দেখাশুনা করতেন। ৫ আগস্টের ক্ষতিসাধন করলে প্রায় এক বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। যদিও তার বংশধর আছে কিন্তু কেউ বাড়িতে যাননি বা সংস্কার করেননি।