Image description

চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলার চন্দ্রঘোনা থানার পশ্চিম কোদালা গ্রামে স্বামীকে হত্যা করে খালে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় মূল রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিলেন নিহতের স্ত্রী কোহিনুর আক্তার, যিনি স্বামীর বন্ধুর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।

গত ৩১ জুন সকালে কৃষক দিদার আলম নিখোঁজ হন। দুই দিন পর, ২ জুলাই তার পিতা জামির হোসেন (৬০) চন্দ্রঘোনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির সূত্র ধরে তদন্তে নামে পিবিআই।

পিবিআই সূত্রে জানা যায়, দিদার আলমের স্ত্রী কোহিনুর আক্তার (২৭) স্বামীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু মো. হানজালার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। স্বামী দিদার আলম বিষয়টি জানতে পেরে আপত্তি জানালে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন কোহিনুর।

জবানবন্দিতে কোহিনুর জানান, গত ৩০ জুন রাতে স্বামীকে ঘুমের ওষুধ মেশানো দুধ খাওয়ান তিনি। গভীর রাতে যখন দিদার অচেতন অবস্থায় ছিলেন, তখন বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

খুনের পর রাতে ছাতা ও টর্চলাইট হাতে নিয়ে কোহিনুর প্রতিবেশী হানজালার বাড়িতে গিয়ে ঘটনা জানালে, হানজালা ও তার সহযোগী সেলিম দিদারের মৃতদেহ প্লাস্টিকে মুড়ে বাড়ি থেকে বের করেন। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে সৃষ্ট প্রবল স্রোতের সুযোগ নিয়ে পার্শ্ববর্তী কোদালা খালে ফেলে দেন দিদারের মরদেহ। আজও পর্যন্ত দিদার আলমের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

নিখোঁজের ঘটনায় নিহতের পিতা জামির হোসেন ২৭ জুলাই কোহিনুর আক্তার ও আব্দুল খালেকসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে চন্দ্রঘোনা থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে মামলা রুজু হয় এবং পরে তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই, চট্টগ্রাম জেলা।

৪ অক্টোবর মামলার দুই এজাহারনামীয় আসামি কোহিনুর আক্তার ও আব্দুল খালেককে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে পিবিআই। পরে তাদের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা, পরিদর্শক মো. রুহুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, “প্রেমঘটিত সম্পর্ক থেকে শুরু হয়ে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে রূপ নেয় ঘটনা। অভিযুক্তদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে।”

শীর্ষনিউজ