Image description

দেশে বার্ষিক চাহিদার ৩০ শতাংশ সারের চাহিদা থাকে আমন মৌসুমে। প্রতিটি জেলায় মৌসুমের শুরুতে চাহিদা অনুযায়ী সার সরবরাহ হয়েছিল। বাজারে সংকট না থাকলেও কৃত্রিম সংকটে অতিরিক্ত দামে সার কিনতে হয়েছিল কৃষকদের। সারের দাম বাড়ায় আমন উৎপাদনে বিঘাপ্রতি অন্তত ১ হাজার টাকা বাড়তি খরচ হয়েছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আসন্ন বোরো মৌসুমেও উৎপাদনের অতিরিক্ত খরচ বাড়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। যার প্রভাব ইতোমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। আলু চাষিরাও বাড়তি দামে সার কিনছেন।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত দুই মাসে সব ধরনের রাসায়নিক সারের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে ডিএপি সারের বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ৫০০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি বস্তা সার বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ১০০ টাকায়। যা এক মাস আগেও ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হতো। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে বিএডিসির এমওপির প্রতি বস্তা ১ হাজার ৭০০ থেকে ১ হাজার ৭৫০ টাকায় এবং টিএসপি ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ বছর সারা দেশে রাসায়নিক সারের বার্ষিক চাহিদা ছিল ৫৭ লাখ ৮৫ হাজার টন। চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশ বিভিন্ন দেশ থেকে সরকারিভাবে আমদানি করা হচ্ছে। বাকি ২০ শতাংশ দেশের কারখানা থেকে মেটানো হয়। বিএডিসির তথ্য মতে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সারা দেশে জুলাই মাসের চাহিদা অনুযায়ী সার ডিলারদের কাছে সরবরাহ করার পরও ৬ লাখ ৩০ হাজার ৬১৩ টন ইউরিয়া সার মজুত রয়েছে। ২ লাখ ১৭ হাজার টন টিএসপি, ২ লাখ ৭৩ হাজার টন ডিএপি এবং ২ লাখ ৮১ হাজার টন এমওপি মজুত আছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আমন মৌসুমে কৃষকের ভোগান্তি ছিল নন-ইউরিয়া সারে। সরকার নির্ধারিত দামের থেকে দ্বিগুণ দামে সার কিনতে হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে টিএসপি। নির্ধারিত দামের থেকে প্রায় ১৩ থেকে ২০ টাকা বেশিতে প্রতি কেজি টিএসপি ৪০-৪৭ টাকায় কিনতে হয়েছে কৃষককে। ২১ টাকার ডিএপির কিনতে হচ্ছে ২৪-৩১ টাকায়, ২০ টাকার এমওপি ২৪-৩০ টাকা এবং ২৭ টাকার ইউরিয়া সার ৩০ টাকা পর্যন্ত দামে কিনেছেন কৃষক। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব এমদাদ উল্লাহ মিয়ান জানান, জানুয়ারি পর্যন্ত সারের কোনো সংকট নেই। মাঠপর্যায়ে সমস্যা থাকলে, তা নিয়ে কাজ করছি। দীর্ঘ সময়ে সারের সিন্ডিকেট ভাঙতে কিছু সময় লাগবে। কৃষকের ভোগান্তি যেন কমে, সেজন্য নীতিমালা করা হয়েছে। কৃত্রিম সংকট তৈরিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।