
প্রায় সাত মাস ধরে তিন দফায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেছে ঐকমত্য কমিশন। সেই আলোচনায় পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি, ওয়াকআউটের মতো ঘটনায় সংসদের আবহ তৈরি হয়। শেষমেষ কিছু বিষয়ে আপত্তি বা নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে ৮৪টি প্রস্তাবে ঐক্যমতে পৌঁছায় দলগুলো।
কিন্তু ঐকমত্যে পৌঁছালেও জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। গত ৮ অক্টোবর কমিশনের শেষ বৈঠকে প্রায় সব দল সনদ বাস্তবায়নে ভোটের দিনেই গণভোটে সম্মত হয়।
আগামী ১৭ অক্টোবর সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় হবে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে। কমিশনের বৈঠকে অংশ নেয়া দলগুলোকে অনুষ্ঠানে দুই সদস্যের প্রতিনিধি পাঠানোর আমন্ত্রণ জানিয়েছে সরকার। সেই আমন্ত্রণ নিয়ে কী ভাবছে রাজনৈতিক দলগুলো?
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা সনদে স্বাক্ষরে আগ্রহী জানালেও খসড়া দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানিয়েছেন এনসিপি নেতারা।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, গণতন্ত্র মঞ্চের প্রতিটি দল জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবে। এটি ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়। ভিন্নমত নিয়ে চলার ক্ষেত্রে এটি একটি মাইলফলক হবে।
এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেছেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষরের ব্যাপারে এনসিপি ইতিবাচক। তবে সনদের খসড়া ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি দেখার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এদিকে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ কয়েক দফা দাবিতে জামায়াতের সাথে যুগপৎ আন্দোলন করছে মামুনুল হকের খেলাফতে মজলিস।
খেলাফত মজলিসের চেয়ারম্যান মামুনুল হক বলেছেন, আমরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবো। কিন্তু নির্বাচনের আগে প্রয়োজনে আন্দোলনের মাধ্যমে সনদের আইনি ভিত্তি আদায় করা হবে।
অন্যদিকে, শুরু থেকেই ঐকমত্য হওয়া প্রস্তাবগুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে জারি করার পরামর্শ দিয়ে আসছে বিএনপি। এছাড়া, সংবিধান সংক্রান্ত সুপারিশ সংসদে হাতে রাখারও সুপারিশ করেছে দলটি। তবুও নির্বাচনের দিন গণভোটের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে সনদ স্বাক্ষরে যাচ্ছেন দলটির দুই সদস্য।
ঐকমত্য কমিশন সংক্রান্ত বিএনপির প্রতিনিধি দলের সদস্য ইসমাঈল জবিউল্লাহ বলেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতো বিএনপিকেও জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সেখানে যাবেন।
ঐকমত্য কমিশন সূত্র জানায়, জুলাই সনদে অঙ্গীকার নামায় কিছু সংশোধনী আনা হয়েছে। দুই-একদিনের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সনদের চূড়ান্ত খসড়া পাঠানো হবে।