Image description

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকায় এক যুবককে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর মিরপুর মডেল থানায় সোপর্দ করেছে নিজেদের ছাত্রদল পরিচয়দানকারী কয়েকজন। বুধবার (৯ অক্টোবর) দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায়—রাতের অন্ধকারে লালমাটিয়া কলেজের পাশের রাস্তা থেকে এক যুবককে মারধর করতে করতে একটি সাদা প্রাইভেটকারে তুলে নেওয়া হচ্ছে।

পরে জানা যায়, ওই যুবকের নাম ইঞ্জিনিয়ার তরিকুল ইসলাম তাহসান, পেশায় প্রযুক্তি পণ্যের ব্যবসায়ী। তিনি রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের শেলটেক কম্পিউটার সিটিতে ব্যবসা করেন এবং ঠিকাদারি কাজের সঙ্গেও যুক্ত। পাশাপাশি মৎস্যজীবী লীগ আদাবর থানার যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, রাত ১১টা ৩২ মিনিটে একজন সাদা শার্ট ও হেলমেট পরা এবং আরেকজন কালো শার্ট ও মুখে মাস্ক পরা ব্যক্তি মিলে তরিকুলকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে মারধর করতে করতে প্রাইভেটকারে তোলে।

এরপর তরিকুলের মোটরসাইকেল উদ্ধার করে মোহাম্মদপুর থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরবর্তীতে রাত ২টার দিকে মিরপুর মডেল থানার এক পুলিশ সদস্য মোহাম্মদপুর থানা থেকে মোটরসাইকেলটি নিয়ে যায়।

ভুক্তভোগীর চাচা আইনজীবী কামরুজ্জামান বলেন, ‘তরিকুল একজন ব্যবসায়ী। কে বা কারা তাকে প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে যায়, আমরা জানি না। গাড়ির ভেতরে তাকে মারধর করা হয় এবং তার ব্যাংক কার্ড ও টাকা-পয়সা নেওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা পর জানতে পারি, তরিকুল মিরপুর মডেল থানায় আছে।’

তিনি আরও জানান, তরিকুল তার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মোহাম্মদপুরে বসবাস করেন।

এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ওসি কাজী রফিক আহমেদ বলেন, ‘আমাদের কাছে যুবককে তুলে নেওয়ার বিষয়ে কোনও তথ্য ছিল না। তবে মিরপুর মডেল থানার পুলিশ এসে মোহাম্মদপুর থানায় রাখা ওই মোটরসাইকেলটি নিয়ে গেছে।’

জানতে চাইলে মিরপুর মডেল থানার ওসি সাজ্জাদ রোমান বলেন, ‘তরিকুলকে মিরপুর এলাকার স্থানীয় ছাত্রদল, যুবদল ও কিছু শিক্ষার্থী আওয়ামী লীগের মিছিলে জড়িত থাকার অভিযোগে ধরে থানায় হস্তান্তর করে। তার পকেট থেকে মোবাইল, চাবি ও মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি নিজেই জানিয়েছেন, তার মোটরসাইকেল লালমাটিয়ায় আছে।’

ওসি আরও বলেন, ‘আমরা জেনেছি তরিকুল মৎস্যজীবী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক। তার নামে কোনও ওয়ারেন্ট বা মামলা ছিল না। তবে জুলাই আন্দোলনের সময়কার একটি হত্যাচেষ্টা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।