
মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল করা হলে তিনি নির্বাচিত হওয়ার যোগ্য হবেন না। অর্থাৎ সংসদ সদস্য, স্থানীয় সরকার পরিষদ বা প্রতিষ্ঠানের মেয়র চেয়ারম্যান নির্বাচন করতে পারবেন না। এছাড়াও সরকারি অফিস অর্থাৎ পাবলিক অফিসে তিনি নিয়োগ পেতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট, ১৯৭৩ সংশোধন করা হয়েছে এবং একটা নতুন সংযোজন আনা হয়েছে। এই সংশোধনী নিয়ে প্রশ্ন আসতে পারে যে, কেন এই পরিবর্তন করা হয়েছে। সে ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বিপ্লবোত্তর পরিবেশে, যখন একটা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে, তখন রাষ্ট্রের প্রয়োজনে, দেশকে সামনে এগিয়ে নেয়ার প্রয়োজনে সরকার এই আইন শুধু নয়, বিভিন্ন আইনের বিভিন্ন সংশোধনী আনছেন, এই রাষ্ট্রকে সঠিক ট্র্যাকে তোলার জন্য। তারই অংশ হিসেবে এটা করা হয়েছে সময়ের প্রয়োজনে।’
তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় যে বিষয়টা আপনাদেরকে বলবো, দল হিসেবে, সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রক্রিয়া চলমান ছিলো, আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হয়েছে এবং তারা দ্রুতই তদন্ত কাজ সম্পন্ন করবেন। তদন্ত রিপোর্ট প্রাপ্তি সাপেক্ষে দল হিসেবে বিচারের জন্য আওয়ামী লীগের ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
রাজনৈতিক দলকে সাজা দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দলকে তো আর সাজা দেয়া যাবে না। কিন্তু আইনে বলা আছে, যে দলকে নিষিদ্ধ করা, প্রপার্টি সিজ্ করা। এগুলো আইনে আছে। তদন্ত রিপোর্ট আসুক, বিচার প্রক্রিয়া প্রবেশ করুক, তখন এগুলো নিয়ে কথা বলবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আগেই আবেদন করা ছিলো, সেই আবেদনটি বিবেচনায় নিয়ে কমপ্লেইন্ট রেজিস্ট্রার নাম্বার দিয়ে আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত যেসব সাক্ষী আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন, এগুলো জুডিশিয়াল ডকুমেন্ট হয়ে গেছে, এগুলো এই মামলায় এভিডেন্স হিসেবে গণ্য হবে।’
তিনি বলেন, ‘দল হিসেবে যেহেতু আওয়ামী লীগের বিচার প্রক্রিয়া চলমান ছিলো না, সুতরাং এই পর্যায়ে আইনের যে সংশোধনী আনা হয়েছে তা এই বিচারকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে না। যদি একজন ব্যক্তির বিচার চলমান আছে, সেই ব্যক্তির বিচারকে প্রভাবিত করতে পারে এমন কিছু সংশোধন হলে তখন এটা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। এখানে যে আইনটা সংশোধন করা হয়েছে, সেটি এখনও প্রয়োগযোগ্য হয়নি, তাই এটা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার সুযোগ নাই। ন্যায় বিচারের পরিপন্থীও হবে না। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনালস) অ্যাক্ট, ১৯৭৩ আইনটি সংবিধান দ্বারা প্রোটেক্টেট একটি আইন। এটিকে আদালত চ্যালেঞ্জও করা যাবে না।’