Image description

প্রায় পাঁচ বছর ধরে অদ্ভুতভাবে বসবাস করছে এক পরিবার। বাড়ি থেকে বের হতে দেখা যায় না মা ও দুই সন্তানকে। রাজধানীর বনশ্রীর মেরাদেয়া এলাকায় এই ঘটনা চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে সম্প্রতি। বনশ্রীর মেরাদেয়া এলাকায় একটি বাড়ির তিনতলায় স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ২০১৮ সাল থেকে ভাড়া থাকছিলেন মনিরুল।

করোনা মহামারির সময় থেকেই তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দেয়। 

বাড়ির দারোয়ান জানান, দীর্ঘদিন ধরেই ওই নারী ও দুই ছেলে বাইরে বের হন না। দুই থেকে তিন মাসে একবার মাত্র ঘর থেকে বের হন তারা। এমনকি ১৬ ও ২১ বছর বয়সী দুই ছেলের পড়াশোনাও বন্ধ রয়েছে প্রায় পাঁচ বছর ধরে।

বাড়িওয়ালা জানান, ভাড়া নিয়মিত পরিশোধ না করায় নোটিশ দিলেও তারা ঘর ছাড়তে রাজি নন। বাধ্য হয়ে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। পুলিশ বাসায় গেলেও দরজা খোলেননি মা ও দুই ছেলে। সাংবাদিকরা কথা বলতে চাইলে ভেতর থেকে শুধু কথোপকথনের শব্দ শোনা যায়।

ভেতর থেকে ওই নারী অভিযোগ করেন, তার স্বামী বাইরে গেলেই হত্যার আশঙ্কা থাকে। তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে পরকীয়া ও ষড়যন্ত্রেরও অভিযোগ তোলেন।এ সময় এক ছেলের কথাও শোনা যায়। সে বলে, আমি এখন স্টুডেন্ট। কিন্তু আমাকে এরা লেখাপড়াও করতে দিচ্ছে না। আমাকে আঁকড়ে ধরসে।

তবে স্ত্রীর এসব অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন স্বামী মনিরুল। পুলিশ ও সাংবাদিকরা এলে একপর্যায়ে তিনিও এসে হাজির হন। অনুরাধ করেন দড়জা খুলতে। তবে সেই নারী দরজা খোলেননি। প্রতিবেশীরাও দরজা খোলাতে ব্যর্থ হন। ফলে পরিবারটির অস্বাভাবিক জীবনযাপন নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
 
চিকিৎসকদের মতে, এ পরিবার মানসিক জটিলতায় ভুগছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের অবস্থায় রোগীর মধ্যে ভ্রান্ত বিশ্বাস (ডিলিউশন) জন্ম নিতে পারে। এতে তারা কাছের মানুষদেরও সন্দেহ করে এবং ধীরে ধীরে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই রোগকে সিজোফ্রেনিয়া বা ডিলিউশনাল ডিসঅর্ডার বলা হয়। এর ফলে রোগীরা দীর্ঘ সময় ঘরে আবদ্ধ থাকতে পারে, বাইরে বের হতে অনীহা প্রকাশ করতে পারে। তাদের দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।