
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বকে নিজেদের মূল কৌশল হিসেবে গ্রহণের আনুষ্ঠানিক অনুমতি চেয়েছে ইসলামি বিশ্ব শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (আইসেসকো)।
সোমবার (৬ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে আইসেসকোর মহাপরিচালক ড. সালিম এম আল মালিক এই অনুমতির কথা জানান।
প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস উইং এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বৈঠকে আইসেসকো মহাপরিচালক ড. আল মালিক অধ্যাপক ইউনূসের বৈশ্বিক প্রভাব ও উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ডের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমি যখন মেডিকেল শিক্ষার্থী, তখনই প্রথম আপনার ও গ্রামীণ ব্যাংকের কথা শুনি। আপনার ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্ব তখন ব্যাংকিং থেকে শুরু করে খেলাধুলা ও পরিবেশ—সব জায়গায় আলোচনায় ছিল। এটি সত্যিই অনুপ্রেরণা দায়ক ছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে আপনার থ্রি জিরো তত্ত্বকে আমাদের মূল কৌশল হিসেবে গ্রহণের অনুমতি চাইতে এসেছি। আপনার দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের মিশনের সঙ্গে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ।
অধ্যাপক ইউনূসের থ্রি জিরো থিওরি হলো— শূন্য দারিদ্র্য, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণ। ড. আল মালিক এই বিষয়গুলো আইসেসকোর যুব উন্নয়ন, শিক্ষা ও পরিবেশ বিষয়ক কৌশলগত কাঠামোর সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করার অনুমতি চান।
ড. আল মালিক প্রধান উপদেষ্টার সংস্কার কর্মসূচি এবং অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবর্তন মুখী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। তিনি জানান, বাংলাদেশে এসে তিনি বেশ কয়েকজন উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছেন এবং জাতীয় সংস্কার পরিকল্পনার বিষয়ে অবগত হয়েছেন।
আইসেসকোর চলমান কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি জানান, সংস্থাটি সদস্য দেশগুলোকে খাদ্য অপচয় ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে সহায়তা করছে এবং ব্রুনেই, আলজেরিয়া ও নাইজেরিয়ার মতো দেশগুলো এরই মধ্যে তাদের সহায়তায় উদ্যোক্তা উদ্যোগগুলোকে সামাজিক ব্যবসা মডেলে রূপান্তর করেছে।
প্রতিক্রিয়ায় অধ্যাপক ইউনূস শিক্ষা ও টেকসই উন্নয়নে আইসেসকোর ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি যুবশক্তির ক্ষমতায়ন এবং সামাজিক ব্যবসার উদ্ভাবনী সমাধানগুলো সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে বিস্তারের লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এসময় বৈঠকে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার উপস্থিত ছিলেন।