Image description

বাগেরহাটে বিএনপি নেতা ও সাংবাদিক এ এস এম হায়াত উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর থানায় মামলা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় তাঁর মা হাসিনা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় হত্যা মামলা করেছেন। এতে মো. ইসরাইল মোল্লাকে প্রধান আসামি করে সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ১০-১২ জনকে।

এদিকে হায়াত উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের আরও কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। একাধিক প্রত্যক্ষদর্শীর ভাষ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় হায়াত নিজ বাড়ির কাছেই সিদ্দিকের চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন। হঠাৎ তিনটি মোটরসাইকেলে করে ছয়-সাতজন সন্ত্রাসী এসে তাঁকে ঘিরে ধরে। তাদের একজন তাঁকে জিজ্ঞেস করে, ‘তুই কোন হাত দিয়ে লিখিস, সেই হাতটা একটু দেখা।’ বলেই দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে হায়াত উদ্দিনকে।

 
 

হায়াত উদ্দিন বাগেরহাট শহরের হাড়িখালি এলাকার মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে। তিনি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বাগেরহাট পৌর বিএনপির সম্মেলনে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের হাড়িখালি এলাকায় হায়াত উদ্দিনের ওপর ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ি নিয়ে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ধারালো অস্ত্রের কোপে মুহূর্তেই রক্তাক্ত হয়ে পড়েন হায়াত উদ্দিন। প্রাণভিক্ষার আকুতি জানানোর পরও থামেনি হামলাকারীরা। এক পর্যায়ে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলেও মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আতঙ্কিত লোকজন এগিয়ে আসারও সাহস পাননি। হামলাকারীরা যাওয়ার পর কয়েকজন তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

জানা গেছে, এলাকার মাদকের কারবার, ঠিকাদারি কাজের মান, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে প্রতিবাদী ছিলেন হায়াত উদ্দিন। এ জন্য কয়েক মাস আগেও তাঁর ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। তাঁকে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলার প্রধান আসামি মো. ইসরাইল মোল্লা বিএনপির কর্মী। পাশাপাশি ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড হেলথ কেয়ার সোসাইটির জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁর বিরুদ্ধে মাদকের কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

বাগেরহাট সদর মডেল থানার ওসি মাহামুদ-উল-হাসান রোববার রাতে বলেন, হায়াত উদ্দিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাঁর মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।