
বরিশালে ভুল চিকিৎসায় এক শিক্ষার্থী জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। ডা. ইকবাল হোসেন আমান নামে এক চিকিৎসকের দেওয়া ভুল ওষুধ প্রয়োগে তার পুরো শরীর ঝলসে গিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৬ দিন ধরে তিনি শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর নাম সাজনিন আহমেদ সাদিয়া। তিনি সরকারি ব্রজমোহন কলেজের (বিএম) দর্শন বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্রী। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা ভালো হলেও তিনি এখনো শঙ্কা মুক্ত নন।
সাদিয়ার স্বজনরা জানান, সাদিয়া কয়েক মাস ধরে দাঁতের ব্যথায় ভুগছিলেন। এজন্য গত আগস্ট মাসের প্রথম দিকে নগরীর সদর রোডে শুভ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দন্ত চিকিৎসক ইকবাল হোসেন আমানের শরণাপন্ন হন। তিনি সাদিয়ার দাঁতের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে আক্কেল দাঁত সোজা করতে টিথ এলেইনার স্থাপন করেন। পরবর্তীতে আক্কেল দাঁতের পাশের আরেকটি দাঁতে সমস্যা দেখা দেয়। পুনরায় ডা. ইকবালের কাছে গেলে তিনি সেই দাঁতে রুট ক্যানেল করে দেন।
সাদিয়া বলেন, রুন ক্যানেল করার পরে তার দেওয়া ওষুধ সেবনের পর থেকেই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। প্যারালাইসডের মতো অসাড় হয়ে পড়ি। পুরো শরীরের ফোসকা পরে ঝলসে যেতে শুরু করে। মুখ ও শরীরে অ্যাসিড পোড়ার মতো জ্বালা এবং মুখ-গলার ভেতরের অংশ গলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ অবস্থায় তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার মা ডা. ইকবালের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি মায়ের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এস. এম. সরওয়ার বলেন, সাদিয়া স্টিভেন জনসন সিনড্রোম (Steven Johnson Syndrome) নামক মারাত্মক জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এটি ভুল ওষুধের প্রতিক্রিয়া থেকে হয়ে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিসেন বিভাগের একাধিক চিকিৎসক জানান, ৬ দিনের চিকিৎসায় তার অবস্থার একটু উন্নত হলেও তিনি শঙ্কা মুক্ত নন। তাকে চিকিৎসার পাশাপাশি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডা. ইকবাল হোসেন আমান বলেন, আমার কাছে আসার পরে তার দাঁতে রুট ক্যানেল করা হয়েছে। তিনি আমার কাছে পুরোপুরি চিকিৎসা নেননি। এছাড়া তিনি আরও কয়েক জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছে।