
টাঙ্গাইলের মধুপুরে শিশু শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষককে মারধর করেছেন ওই শিক্ষার্থীর বাবা ও তার সহযোগীরা। তবে এলাকার কারও কারও ভাষ্য, মাদ্রাসাটির তৃতীয় শ্রেণির আট বছর বয়সী এক ছাত্রীকে বেত্রাঘাতের জেরে হামলার শিকার হন ওই মাদ্রাসা শিক্ষক।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়নের বংশিবাইদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ওমর ফারুক (৩৩) বংশিবাইদ মারকাযুল উলুম নূরানি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক। তিনি জামে মসজিদের ইমাম হিসেবে ১১ মাস ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন তিনি।
বংশিবাইদ গ্রামের একাধিক বাসিন্দার ভাষ্য অনুযায়ী, মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে বেত দিয়ে আঘাতের ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষার্থীর বাবা হুমায়ুন (৩৬) এবং তার সহযোগী হানিফ (৫০), সুজনসহ ১৫-২০ জন এশার নামাজের শেষ মুহূর্তে মসজিদে ঢুকে ওমর ফারুকের ওপর হামলা চালান। তাকে তারা টেনেহিঁচড়ে বাইরে এনে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকেন।
এ সময় ওমর ফারুককে রক্ষায় কয়েকজন মুসল্লি এবং আশপাশের বাড়ির কয়েকজন এগিয়ে এলে তাদের সঙ্গে হামলাকারীদের ধস্তাধস্তি হয়। এতে অন্তত ৭-৮ জন আহত হন। এর মধ্যে নারীও ছিলেন। আহত ওমর ফারুককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। অন্য আহতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন আ. কাদের (৬৫), ইয়াদ আলী (৪৫), শাহজালাল (১৭), চায়না বেগম (৪৩), ফাতেমা বেগম (৫৮) ও শাহনাজ (৩০)।
ভুক্তভোগী শিশু শিক্ষার্থীর মায়ের অভিযোগ, মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক ক্লাস শেষে তার মেয়েকে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানি করেন। এর জেরে ক্ষুব্ধ অভিভাবক ও স্বজনরা হামলা চালায়।
তবে এ বিষয়ে এলাকার বাসিন্দারা বিভক্ত হয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। হামলার ওই ঘটনার পর পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মসজিদের আশপাশের লোকালয়ের বহু নারী-পুরুষ জড়ো হয়ে হামলাকারীদের ধাওয়া করলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঘটনাস্থলের পাশের মধুপুর থানার অধীন অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ রুবেল কালবেলাকে বলেন, ‘শিশুকে শ্লীলতাহানির অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি হামলার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’