Image description
 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ১৪টি বিভাগে চলছে তীব্র শিক্ষক সংকট। অল্পসংখ্যক স্থায়ী শিক্ষক আর ধার করা শিক্ষকের ওপর ভরসা করেই কোনোভাবে এগোচ্ছে একাডেমিক কার্যক্রম। ফলে একদিকে বাড়ছে সেশনজট, অন্যদিকে ব্যাহত হচ্ছে মানসম্মত শিক্ষা।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মোট ৩৬টি বিভাগের মধ্যে ১৪টি বিভাগে সংকট সবচেয়ে বেশি। এর মধ্যে চারুকলায় ৫ জন, সমাজকল্যাণে ৪ জন, রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ৫ জন, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজে ৩ জন, ফোকলোর স্টাডিজে ৪ জন, ল’ অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্টে ৪ জন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টে ৪ জন, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টে ৫ জন, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞানে ২ জন, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ৪ জন, ফার্মেসিতে ৬ জন, কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজমে ২ জন, মার্কেটিংয়ে ৫ জন এবং জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টে ৪ জন শিক্ষক রয়েছেন। প্রতিটি বিভাগে একাধিক ব্যাচ অধ্যয়নরত থাকায় স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষকে বাধ্য হয়ে অন্যান্য বিভাগ থেকে শিক্ষক ধার করতে হচ্ছে।

বিভাগীয় প্রধানরা অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব এবং অব্যবস্থাপনাই এই সংকট নিরসনে প্রধান অন্তরায়।

রেজিস্ট্রার দপ্তরের তথ্যমতে, চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ধর্মতত্ত্ব, বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, জীববিজ্ঞান, কলা, সামাজিক বিজ্ঞান, আইন ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের মোট ২১টি বিভাগে ৫৯টি শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে ইউজিসির পূর্বানুমতি না নেওয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। পরে ইউজিসি কেবল ৬টি বিভাগে ৬টি পদে অর্থ ছাড় দেয়, যা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

আইকিউএসি সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৬টি বিভাগের অ্যাক্রিডিটেশনের শর্ত পূরণে যেখানে অন্তত ১ হাজার ৮০ জন শিক্ষকের প্রয়োজন, সেখানে বর্তমানে শিক্ষক আছেন মাত্র ৪০৫ জন।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সেশনজট কিছুটা কাটলেও প্রত্যাশিত মানের শিক্ষা পাচ্ছেন না তারা। শিক্ষকদেরও সামলাতে হচ্ছে অতিরিক্ত কোর্সের চাপ, যা স্বাভাবিক পাঠদান কার্যক্রমকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

এ প্রসঙ্গে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, ‘অর্থ ছাড় পাওয়া যাবে ভেবে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাত্র ৬য়টি পদের অনুমোদন আসে।’ 

তিনি জানান, এ বিষয়ে ইউজিসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং খুব দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।