Image description

সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, স্বৈরাচার হাসিনার একটি অডিও শুনলাম। সেখানে সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুকে নির্দেশ করে হাসিনা বলছে, সাংবাদিকদের হাদিয়া দাও আর যদি কথা না শুনে তাহলে চ্যানেলের লাইন কেটে দাও।

হাসিনা বিপুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সাংবাদিকদের হাদিয়া দিয়ে ভালো কাভারেজ করতেছো না কেন। তোমার কথা যেগুলো সেগুলো তো আসতেছে না।

ওদেরকে হাদিয়া দাও এবং সেইভাবে ব্যবস্থা করো। তখন উত্তরে বিপু বলেন, আমি ঢাকা শহরে ১৮টি ক্যামেরা নিয়ে ঘুরতেছি কিন্তু যে কথাগুলো বলা দরকার সেগুলো তো দিচ্ছে না। তখন হাসিনা আবার বলেন, যদি না দেয় তাহলে বলো বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেব, চ্যানেলের লাইন কেটে দেব।

গত বছরের ২৪ জুলাই শেখ হাসিনা ও নসরুল হামিদ বিপুর মধ্যে এ ফোনালাপ হয় বলে জানা গেছে।

পাঠকদের জন্য ফোনালাপটি হুবহু তুলে ধরা হলো—

ফোনালাপে নসরুল হামিদ বিপু বলেন, জ্বালানি বিল নিয়ে আর কোনো সমস্যা নেই। একদিনে কাভার করে ফেলছি ২৪ লাখ। শেখ হাসিনা বলেন, ২৪ লাখ! তাহলে এটা নিউজ করো। 

উত্তরে বিপু বলেন, করছি তো।

সকাল থেকে সমস্ত সাংবাদিক নিয়ে পুরো ঢাকা শহর ঘুরছি। হাসিনা বলেন, কই একবারও তো ক্যামেরায় দেখলাম না। 

বিপু বলেন, আরে দেখবেন কেমনে! কালকে আমি জোর করে বললাম, এত ছবি তুললা একটাও তো দেখাইলা না। হাসিনা বলেন, আমি যা বলি শুনো, থোরাসা হাদিয়া দে দো। 

বিপু বলেন, হু ঠিকাছে।

ওইটা আমি মাথায় রাখছি। আজকে ডাইকা আমি বলছি। হইছে কি আমি বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী কথা যেটা বলছি ওইটা কাইটা দিয়ে বাকি কথা রাখতেছে। উত্তরে হাসিনা বলেন, কাটলে বলবা তোদের বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেব। 

ফোনে হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, শিবির আর ছাত্রদল মিলেই যে (অগ্নিসংযোগ) করছে, মানে বিএনপি-জামায়াত যে করছে, এটা বারবার বলতে হবে, লিখতে হবে। আর বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করো। কারণ বিদেশে খবর যাচ্ছে ছাত্রলীগ এসব করছে। ছাত্রলীগ তো মাইর খেয়ে বের হয়ে চলে আসছে। তাদের তো কিচ্ছু নেই, কাপড়চোপড় নেই। বলে, আপা আমরা এক কাপড়ে।

নসরুল হামিদ বিপু হচ্ছে হাসিনা সরকারের একজন মাফিয়া এবং টাকা পাচারকারী দুর্নীতিবাজ। বহু বছর ধরে তিনি বিদ্যুৎ এবং জ্বালানির দায়িত্বে ছিলেন। এখন পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ১৬টি দেশে বিপু ও তার পরিবারের সম্পদের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে অনেকেই মনে করেন আরো অনেক দেশেই বিপুর লুণ্ঠনের টাকা রয়েছে। এখন পর্যন্ত যেসব দেশে বিপুর অর্থের সন্ধান পাওয়া গেছে, তার মধ্যে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, বারমুডা, মাল্টা, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, মোনাকো, সাইপ্রাস ও তুরস্ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি কম্পানি খুলে ওই কম্পানির মাধ্যমে নসরুল হামিদ বিপুর হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ পাওয়া গেছে।