
রাজধানীর রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্ট আবাসিক এলাকার একটি লাইব্রেরিতে আওয়ামী লীগের দোসররা আড্ডা দেয় এমন অভিযোগ তুলে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এসময় লাইব্রেরিতে থাকা বই, চেয়ারটেবিল ও আসবাবপত্র লুট করারও অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এই লাইব্রেরিটি ইউনাইটেড ব্রাদার্স নামে একটি ক্রিকেট ক্লাব পরিচালনা করে আসছে।
এ ঘটনায় ইউনাইটেড ব্রাদার্স ক্লাবের সভাপতি আব্দুল্লাহ ফাহাদ তুরাগ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, উন্মুক্ত লাইব্রেরি ও ইউনাইটেড ক্লাবের অস্থায়ী অফিসকক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ভঙচুরের পাশাপাশি লাইব্রেরিতে থাকা বই, ৪০টি চেয়ার, পাঁচটি টেবিল, চারটি সিসিটিভি ক্যামেরা, একটি হার্ডডিস্ক, একটি রাউটার, ক্লাবের মাঠের ৩০টি ফ্লাডলাইট, ক্রিকেট খেলার সামগ্রীসহ প্রায় আড়াই লাখ টাকার মালামাল লুট করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অফিসকক্ষ ও লাইব্রেরি ভাঙচুরে আনুমানিক ৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে আব্দুল্লাহ ফাহাদ আল ফয়সাল গণমাধ্যমকে বলেন, দুইপক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে আমাদের উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের দোসররা লাইব্রেরিতে বসে আড্ডা দেয় ট্যাগ দিয়ে এই ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে লাইব্রেরি পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে হামলা চালানোর অভিযোগ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা রাসেল হোসেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, লাইব্রেরির মধ্যে থেকে ২০-২৩ জনের একটি দল এসে আমাদের ওপর দা, স্টাম্প, লাঠিসোটা দিয়ে হামলা চালায়। হামলায় আমার হাত ভেঙে গেছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে যেসব জায়গায় লাঠিসোটা ছিল সাধারণ মানুষ সেগুলো ভাঙচুর করেছে। লাইব্রেরি ভাঙচুর করা হয়নি। ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিতে লাইব্রেরি ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, রাজউক উত্তরা অ্যাপার্টমেন্ট প্রজেক্ট এলাকার চার নম্বর গেটের সামনের দোকানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় একজনকে মারধরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত আড়াইটার দিকে আবাসিক এলাকার ভেতরের ব্রাদার্স ইউনাইটেড ক্লাবের মাঠ এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা রাসেল হোসেন, হাবিবুল বাশার ও আবরার হানিফের গ্রুপের সঙ্গে আবাসিক এলাকার মোস্তাফিজ হাবিব সুমনের অনুসারীদের মধ্যে মারামারি হয়। মারামারিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তুরাগ থানার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল হোসেনসহ কয়েকজন আহত হন। ব্রাদার্স ইউনাইটেড ক্লাবের লাইব্রেরি থেকে লাটিসোটা নিয়ে তাদের ওপর হামলা করা হয় এমন অভিযোগ তুলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সাবেক নেতারা সেখানে ভাঙচুর করেন বলে লাইব্রেরিটি পরিচালনায় যুক্ত ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। ভঙচুরের সময় আওয়ামী লীগের দোসররা লাইব্রেরিতে বসে আড্ডা দেয়, এমন অভিযোগ করেন হামলাকারীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিরোধে যুক্ত মোস্তাফিজ হাবিব সুমন বলেন, ‘আবাসিক এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কয়েকজন নেতা অবৈধ দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছে। গতকাল সন্ধ্যায় ওই দোকান এলাকায় রাতুল ও পারভেজ নামে দুই ছেলেকে মারধর করে। আমি এই ঘটনার মীমাংসা করতে গেলে আবুল বাশার, আবরার হানিফ ও রাসেলসহ অন্যরা বেয়াদবি করে। যার কারণে আমার সঙ্গে থাকা আমার ছোট ভাইয়েরা তাদের মেরেছে। পরে তারা লাইব্রেরি ভাঙচুরের মতো জঘন্য কাজ করেছে।’
তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, সেখানে দুইপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে এতটুকু জানি কিন্তু লাইব্রেরি ভাঙচুর সক্রান্ত কোনো তথ্য আসেনি আমাদের কাছে।