
Shafquat Rabbee Anik (শাফকাত রাব্বি অনিক)
লন্ডনে স্মরণকালের সব চাইতে বড় এন্টি ইমিগ্রেন্ট মার্চ হয়েছে গতকাল। র্যালির নাম ছিল "ইউনাইট দ্যা কিংডম"।
এই ধরনের র্যালি বঙ্গদেশে শুরু হবে শীঘ্রই।
এবং এগুলোর রাজনীতিক প্রভাব বাংলাদশের উপরেও পড়বে সাংঘাতিক ভাবে।
কালকের লন্ডনের রালির ভিডিও লিংক কমেন্টে দিয়েছি নিচে।
এই র্যালীর আয়োজক ছিলেন টমি রবিনসন। সে একজন ফার রাইট সোস্যাল মিডিয়া পারসন। তাকে ইসলাম বিদ্বেষী, হোয়াইট ন্যাশনালিস্ট, ক্রিশ্চান ন্যাশনালিস্ট ইত্যাদি উপাধিতেও ডাকা হয়।
এই লোকের নাম প্রথম শুনি ২০১৭ সালে ট্রাম্পের প্রথম আমলে। তখন একজন হোয়াইট সুপ্রিমিস্ট গাড়ি উঠিয়ে দেয় লেফটিস্টদের একটা মিছিলে। এটা "শার্লোটস ভিল এটাক" নামে পরিচিত।
তখন টমি রবিনসন এর বক্তব্য একরাত্রে টানা ১৬ ঘণ্টা বসে শুনেছিলাম।
মোটা দাগে ইসলাম এবং মুসলিমদের নিয়ে তার সাংঘাতিক ঘৃনা আছে।
তবে সে দাবি করেছিল মুসলিম দেশে ইসলাম থাকলে তার সমস্যা নাই, কিন্তু যদি মুসলিমরা যদি ব্রিটেনে এসে ব্রিটেনের জাতীয় চরিত্র পরিবর্তন করতে চায় তাহলে তার সমস্যা আছে।
এর বাইরে তার অনেক দাবি দাওয়া একজন উগ্র জাতীয়তাবাদী ব্রিটিশ কিংবা শ্বেতাঙ্গ কিংবা ক্রিশ্চান ন্যাশনালিস্ট ব্যক্তির মতোই। কিছু কিছু দাবি লজিক্যালও, আপনি নিজে সাদা বা ক্রিশ্চান হলে সহজেই মেনে নিবেন এমন সব দাবি দাওয়া।
টমি রবিনসন তখন থেকে আজ মাত্র ৮ বছরের মাথায় একজন উগ্র জাতীয়তাবাদী থেকে মেইন স্ট্রিম জাতীয়তাবাদী হয়ে উঠেছে।
ব্রিটেনের সব মেইনস্ট্রিম মিডিয়া তাকে যথেষ্ট সিরিয়াসলি নিচ্ছে, কারণ তার ক্রিশ্চান ন্যাশনালিস্ট কথা বার্তার পেছনে পুরা ব্রিটেনের নরমাল মানুষজন এসে দাঁড়িয়ে গেছে।
এই টমি রবিনসন মডেল ব্যবহার করে যদি কোন ব্যক্তি বাংলাদেশে ইসলাম এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদকে এক করে ফেলতে পারে, তাহলে সেই রাজনৈতিক ককটেল বা মিশ্রণ অপ্রতিরোধ্য হয়ে যাবে বলে মনে হচ্ছে।
এই কথাটা এমন একটা সময় বলছি যখন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বাঙালি-জাতীয়তাবাদ আপাতত সম্পূর্ণ ভাবেই পলাতক বা দৌড়ের উপর।
এই সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদশের জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী শক্তির মধ্যে অনেকে একটি "ইসলামী বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ" বা "ইসলামিক বাংলাদেশী আইডেন্টিটি" প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে।
তরুণদের মধ্যে তীব্র ভারত বিরোধিতা এবং প্রাউড ইসলামিক আইডেন্টিটি, তার সাথে পপুলিস্ট পলিটিকাল পজিশন এবং এস্তাবলিশমেন্ট পলিটিকাল পার্টি দুটোর বিরুদ্ধে গিয়ে নতুন কিছু করার তীব্র বাসনা এই "ইসলামী বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ" প্রতিষ্ঠার উর্বর ক্ষেত্র তৈরি করেছে। ওপেনিং তৈরি করেছে।
শেষ মেষ যে রাজনীতিক শক্তি এই ধারাকে লিড দিতে পারবে তাকে থামায় রাখা কঠিন হয়ে যেতে পারে , যেভাবে এদের হোয়াইট - ক্রিশ্চান কাজিনকে পশ্চিমে সামলানো মুশকিল হয়ে গিয়েছে।
অর্থাৎ এরা হবে পশ্চিমের সাদা-ক্রিশ্চান ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট গুলোর মুসলিম ও লোকাল বাংলাদেশী ভার্সন।
পশ্চিমের ট্র্যাডিশনাল পলিটিকাল পার্টি গুলো যেমন অসহায় এই মুহূর্তে এই ধরনের ডান পন্থার উত্থানে, একই রকম ঘটনা ঘটে যেতে পারে বাংলাদেশে ইসলামী জাতীয়তাবাদের কিংবা উগ্র জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে গেলে।
এটাকে সামলানোর জন্যে প্রচুর কাজ করতে হবে বিএনপির মতো মধ্যপন্থী দল গুলোর পলিটিকাল কমিউনিকেশনে।
"ইসলামি - বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ" এর একাংশকে নিজেদের মধ্যে টেনে নিয়েও নিতে হতে পারে।
তবে এগুলো অনেক কঠিন কাজ এবং যাদের এইগুলি করতে হবে তারা ব্যাপার গুলো বুঝতেছেন কিনা কিংবা তারা রেডি কিনা আমি শিউর না।