
নেত্রকোনায় ধারের টাকা ফেরত চাওয়ায় মো. জাহাঙ্গীর মিয়া নামের এক কলেজশিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সজল কুমার সরকার কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে সদর উপজেলার কাইলাটী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো. জাহাঙ্গীর মিয়া কাইলাটী গ্রামের বাসিন্দা মো. উসমান আলীর ছেলে। তিনি নেত্রকোনা সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহতের বড় ভাই আলমগীর চল্লিশাকান্দা বাজারে মুদি দোকানের ব্যবসা করেন। তার কাছ থেকে চার হাজার টাকা ধার নেন পাশের গ্রামের রনি ও তরিকুল। দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও ধারের টাকা ফেরত দেননি তারা। আলমগীর টাকা চাইতে গেলে তাকে মারধরের হুমকি দেন।
আরও জানা গেছে, শুক্রবার রাতে আবারও টাকা চাইলে আলমগীরের উপর হামলা চালায় রনি ও তরিকুলরা। প্রাণ বাঁচাতে আহত অবস্থায় চিৎকার করে দৌড়ে বাড়ির দিকে যান তিনি। ভাইয়ের চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হয়ে আসেন কলেজশিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর। এ সময় প্রতিপক্ষরা বাড়ির গেটে জাহাঙ্গীরকে পেয়ে তার ওপর হামলা চালায়। পরে গুরুতর আহত জাহাঙ্গীরকে প্রতিপক্ষের লোকজন নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন হাসপাতালে গেলে জাহাঙ্গীরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা উসমান আলী কালবেলাকে বলেন, ধারের টাকা ফেরত চাওয়ায় আমার বড় ছেলে আলমগীরের ওপর ছোট কাইলাটী গ্রামের রনি, ঔরঙ্গবাদ গ্রামের তরিকুলসহ ৮/১০ জন সশস্ত্র হামলা চালায়। জীবন বাঁচাতে চিৎকার করে বাড়ির দিকে এলে আমার ছোট ছেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। পরে তারা আমার ছেলেকে পেটাতে পেটাতে ব্রিজের কাছে নিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ব্রিজের ওপর তার মৃত্যু নিশ্চিত করে হাসপাতালে ফেলে রেখে চলে যায়। যাওয়ার সময় আমাদের পরিবারের সবাইকে হত্যার হুমকি দিয়ে গেছে তারা। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সজল কুমার সরকার বলেন, ধারের টাকা চাওয়ায় প্রতিপক্ষের হামলায় দুই ভাই গুরুতর আহত হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন মারা যান। এ ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।