Image description

ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার পলায়ন ও তার সরকারের পতন হয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান কমিটমেন্ট ছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার। কিন্তু দেখা গেলো, অন্তর্বর্তী সরকারের কর্তাব্যক্তিরা শেখ হাসিনার চিহ্নিত দোসরদের বিচার বা শাস্তির পরিবর্তে উল্টো পুরস্কারও দিচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে। এ নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে, আন্দোলন হয়েছে। অনেক লেখালেখিও হয়েছে গণমাধ্যমে। কিন্তু তাতে অন্তর্বর্তী সরকার থামেনি। সর্বশেষ এ প্রমাণও পাওয়া গেলো, শিক্ষা ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদ অর্থাৎ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) পদে যিনি বর্তমানে বহাল হয়েছেন- প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান শুধু হাসিনার দোসরই নয় শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষক, জাতির পিতা এবং গণতন্ত্র হরণকারী শেখ হাসিনাকে ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা’ উপাধিতে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালিয়েছেন ৫ আগস্টের আগে। এ সংক্রান্ত বক্তৃতা-বিবৃতি নিজের ফেইসবুক আইডিতেও প্রচার চালাতেন বরাবরই, অন্যরা যাতে এ কাজে উদ্বুদ্ধ হয়। প্রাক্তন কর্মস্থলের সবাই তাকে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে জানত। ফেইসবুকের পোস্টে তার বর্ণনায় মুজিব প্রেম ও হাসিনা প্রীতি ছাড়া অন্য কিছু স্থান পেত না। ৫ আগস্ট ২০২৪ এর পর প্রফেসর আজাদ খান ফেইসবুক আইডি থেকে ওইসব পোস্ট ডিলিট করে দেন। তবে তারপরও একটি প্রমাণ রয়ে গেছে জামালপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ মুজিবনগর দিবস উপলক্ষ্যে দেয়া বক্তৃতার ভিডিও-তে। শেখ মুজিব ও হাসিনা বন্দনার এ ভিডিওটি ওভার ভাইরাল হওয়ার কারণে ভিডিওটি তিনি ডিলিট করতে পারেননি।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ১৭ এপ্রিল জেলা প্রশাসনের ওই অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ আজাদ খান তাঁর প্রেজেন্টেশনে উপস্থিত সবাইকে মুজিবীয় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বক্তব্যের শুরুতেই বললেন, ‘গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি দক্ষিণ এশিয়ার মহামানব স্বাধীনতার ঘোষক ও সর্বাধিনায়ক বাঙালিজাতির পরিত্রাণকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।’ বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি এও বলেছেন, শেখ মুজিবের জন্ম না হলে বাংলাদেশ কখনও স্বাধীনতার স্বাদ পেত না। “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু” বলে তিনি বক্তব্য শেষ করেছেন। “যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা” এই স্লোগান তিনি পাওয়ার পয়েন্টে তুলে ধরে শেখ হাসিনার মত যোগ্য নেতৃত্বকে দীর্ঘস্থায়ী করে তাকে আমৃত্যু প্রধানমন্ত্রী করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। প্রফেসর আজাদ খান ওই অনুষ্ঠানে মূল আলোচক হিসেবে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করেন। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনেই এ বক্তব্য দেন এবং আহ্বান জানান।

‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা’ শেখ হাসিনাকে আমৃত্য প্রধানমন্ত্রী করার আহ্বানকারী সেই অধ্যাপক আজাদ খানই এখন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি অর্থাৎ শিক্ষা ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদে, যা অবাক করার মতো ঘটনাই বটে!! গত ১৯ ফেব্রুয়ারি তিনি এই পদে নিয়োগ পেয়েছেন। ওই সময় ছিলেন জামালপুরের সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে। ওই সময়ের শিক্ষা সচিব সিদ্দিক যোবায়ের-এর হাত দিয়েই মাউশির ডিজি পদে নিয়োগ পেয়েছেন। তবে তাঁর এই নিয়োগে মূল ভূমিকা রেখেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, যিনি ইতিপূর্বে শিক্ষা সচিব পদে চুক্তিভিত্তিতে নিয়োজিত ছিলেন। এই শেখ আব্দুর রশীদকেই অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে আওয়ামী পুনর্বাসনের অন্যতম হোতা হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।

মাউশির ডিজি ড. মুহাম্মদ আজাদ খানের আওয়ামী ইতিহাস   
মো. আজাদ খান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগ থেকে পিএইচ ডিগ্রী লাভ করেন। প্রসঙ্গত, ওই সময়ে আওয়ামী সরকারের দলকানা অনুগত ছাড়া অন্য কাউকে পিএইচডির অনুমতি দেয়া হয়নি। আজাদ খান আওয়ামী সরকারের পুরোপুরি আস্থা অর্জন করেই পিএইচডি-তে ভর্তি হন। পিএইচডি-তে তার সুপারভাইজার হিসেবে ছিলেন ফ্যাসিস্টের আরেক দোসর প্রফেসর আব্দুল মান্নান যিনি বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য। বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আব্দুর রশিদ আহম্মেদ ২৫/০৭/২০২৩ তারিখে স্বাক্ষরিত সমাজবিজ্ঞান ভবন অনুষদ কমিটির ১ নং সদস্য হলেন প্রফেসর আব্দুল মান্নান এবং তার স্ত্রী প্রফেসর সামছুন নাহার ৪ নং সদস্য। এই প্রফেসর আব্দুল মান্নান ও তার স্ত্রী সামছুন নাহার জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন। জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি প্যানেল থেকে নির্বাচন করেন।

এই ফ্যাসিস্ট প্রফেসর আব্দুল মান্নানের অত্যন্ত অনুগত ও আস্থাভাজন হওয়ায় আজাদ খানকে ঝামেলাবিহীনভাবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় অতি অল্প সময়ে পিএইচডি ডিগ্রী প্রদান করা হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ক্যাডারে আওয়ামীপন্থিদের সমন্বয়েরও দায়িত্ব পালন করেন ড. আজাদ খান।

ফ্যাসিস্ট আমলে দীর্ঘ ১৫ বছর নিজ এলাকায় বসবাস করে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ, জামালপুর ও কুমুদীনি মহিলা কলেজ, টাঙ্গাইল-এ প্রচন্ড দাপটের সাথে চাকরি করেন। প্রাক্তন কর্মস্থলের সবাই তাকে আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে জানত এবং তিনি বিভিন্ন সময়ে সভা, সেমিনারে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার বন্দনা করে বক্তব্য রাখতেন। ফেইসবুকে এগুলো পোস্টও দিতেন। তার বর্ণনায় মুজিব প্রেম ও হাসিনা প্রীতি ছাড়া অন্য কিছু স্থান পেত না।

৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখে ফেইসবুক থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষের সবগুলো পোস্ট ডিলিট করলেও জামালপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ তারিখে মুজিবনগর দিবস উপলক্ষ্যে শেখ মুজিব ও হাসিনা বন্দনার ভিডিওটি ওভার ভাইরাল হওয়ার কারণে এটি তিনি ডিলিট করতে পারেননি। তবে এই ভিডিওটির মিউট করতে পারছেন নিজের আইডি-তে। কিন্তু ওই সময়ের জামালপুর জেলা প্রশাসনের আকাইভ সূত্রে এবং তার অন্যান্য সহকর্মীদের থেকে এর বিস্তারিত বর্ণনা পাওয়া গেছে। ভিডিওটিও পাওয়া গেছে।

আজাদ খান তার ভেরিফাইড ফেইসবুক আইডি থেকে ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ এই ভিডিওটি পোস্ট করেন। তার এই আইডি এখনও সচল আছে এবং তিনি তা ব্যবহার করছেন। ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ সালে মুজিব নগর দিবসে মুখ্য আলোচক হিসেবে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আজাদ খান শেখ মুজিব ও হাসিনা বন্দনা করেন পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে।

প্রশ্ন হলো- জামালপুর জেলা প্রশাসন কেন তাকে ওই অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে মনোনয়ন দিলো? জবাবটা সহজ- তিনি তার কার্যক্রম দ্বারা এটা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, জামালপুর সিভিল প্রশাসন এবং শিক্ষা প্রশাসনে তার চেয়ে বিশ্বস্ত আওয়ামীপন্থি অফিসার আর কেউ ছিল না। জেলা প্রশাসন থেকে মনোনয়ন দেওয়ার পর এনএসআই, ডিজিএফআই, এসবিসহ সকল নিরাপত্তা এজেন্সী তাকে আওয়ামীপন্থি হিসেবে নিশ্চিত করেছে। তারপরই তিনি অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে যোগদানের সুযোগ পান। পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে শেখ মুজিবকে মহামানবরূপে তুলে ধরে এমনভাবে স্লাইড তৈরি ও উপস্থাপন করেন, যাতে শেখ হাসিনার তুষ্টি অর্জন করা যায়। এই পাওয়ার পয়েন্ট তৈরি করতে তিনি যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন এবং পরিশ্রম করেছেন তা অবিশ্বাস্য এবং অস্বাভাবিক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই, এমনকি আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারাও ড. আজাদ খানের এমন মুজিব-হাসিনা বন্দনায় অবাক হয়েছেন। কারণ, তারা নিজেরা এত বছর আওয়ামী লীগের নেতাগিরি করেও এমন বন্দনা করতে পারতেন না।

কি ছিল তার পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে-
জেলা প্রশাসনের ওই অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে তিনি যা বলেছেন এক্ষেত্রে হুবহু তুলে ধরা হলো, “সম্মানীত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথিবৃন্দ, সুধীমন্ডলী ও প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ, আস্সালামু আলাইকুম। আজ ১৭ই এপ্রিল ২০২৪ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। জামালপুর জেলা প্রশাসন আয়োজিত আজকের মুজিবনগর দিবসে সবাইকে জানাচ্ছি মুজিবীয় শুভেচ্ছা। আমাকে এই মুজিবনগর দিবসের মুখ্য আলোচক মনোনীত করায় আয়োজক কমিটি ও জামালপুর জেলা প্রশাসনকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। বক্তব্যের শুরুতেই গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি দক্ষিণ এশিয়ার মহামানব স্বাধীনতার ঘোষক ও সর্বাধিনায়ক বাঙ্গালী জাতির পরিত্রাণকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, একদল বিপথগামী সেনাকর্মকর্তার বিশ্বাসঘাতকতার কারণে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শাহাদতবরণকারী বঙ্গবন্ধু পরিবারের ১৯ জনকে, ৫২’র শহীদ ভাষাসৈনিকদের ও ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী ৩০ লক্ষ শহীদদের যাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে বিশ্বমানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছে।”

“প্রিয় সুধী, ১৭ই এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল শেখ মুজিবকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুলকে উপরাষ্ট্রপতি ও তাজউদ্দিনকে প্রধানমন্ত্রী করে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়। এই সরকারই স্বাধীনতাযুদ্ধের সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি মুজিব হলেন রাষ্ট্রপতি আর ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে সৈয়দ নজরুলই মূলত এই অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারকে নেতৃত্ব দিতে থাকেন। দেশ-বিদেশে স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বমত তৈরীর মাধ্যমে দ্রুত বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন করাই ছিল এই সরকারের প্রধান কাজ। এই সরকার গঠিত না হলে আর শেখ মুজিবের জন্ম না হলে বাংলাদেশ কখনও স্বাধীনতার স্বাদ পেত না। আমরা বাঙ্গালী জাতি হিসেবে মুজিবনগর সরকারের কাছে চির ঋণী। মুজিবনগর সরকারের চেতনাকে ধারণ করে বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের হাত ধরে বাংলাদেশ দুর্বার গতিতে বিশ্বে রোল মডেল হতে যাচ্ছে, ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরিত হচ্ছে এবং ডেল্টা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। হাসিনা সরকারের সার্বিক সফলতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। পরিশেষে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের সফলতা কামনা করে আমি আমার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষ করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।”

অধ্যাপক আজাদ খান মুক্তিযুদ্ধের সকল কৃতিত্ব শেখ মুজিবকে দিয়েছেন, যাতে উপস্থিত সবাই মনে করেন যে মুজিব ছাড়া ওই মুক্তিযুদ্ধে কারো কোন অবদান নাই। পাওয়ার পয়েন্টের স্ক্রীনে বৈদ্যনাথপুরে শেখ মুজিবের ছবি এমনভাবে প্রতিস্থাপন করেন যেন শেখ মুজিব ওই সময় বৈদ্যনাথপুরে স্বশরীরে উপস্থিত ছিলেন। মুজিব বন্দনা শেষে অনাকাঙ্খিতভাবে হাসিনা বন্দনায় চলে আসেন। তিনি ফ্যাসিস্ট ও গণতন্ত্র হত্যাকারী শেখ হাসিনাকে “গণতন্ত্রের মানসকন্যা” হিসেবেও অভিহিত করেন।

“যোগ্য পিতার যোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা” এই স্লোগান তিনি পাওয়ার পয়েন্টে তুলে ধরে শেখ হাসিনার মত যোগ্য নেতৃত্বকে দীর্ঘস্থায়ী করে তাকে আমৃত্যু প্রধানমন্ত্রী করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান

মাউশির ডিজি হিসেবে কেন এবং কোন সময়ে তাকে বেছে নেয়া হলো?
ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর শিক্ষা সচিব হিসেবে ড. শেখ আব্দুর রশীদ দায়িত্ব পালনকালে তখনকার ডিজিএফআই’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেফাউল করিম এর বড় ভাই রেজাইল করিমকে ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। ড. রশীদ মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসাবে পদায়ন পেলে সিদ্দিক যোবায়ের শিক্ষা সচিবের দায়িত্ব পান। ড. শেখ আব্দুর রশীদের ধারাবাহিকতায় তিনিও ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া চালিয়ে যান। রেজাউল করিমের স্বাভাবিক অবসরে যাওয়ার পর সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপুমনি ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অতি আস্থাভাজন, শিক্ষা ক্যাডারের অন্যতম ফ্যাসিস্ট সফিউল আজমকে ভারপ্রাপ্ত ডিজি হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন শিক্ষা সচিব সিদ্দিক যোবায়ের। কিন্তু শিক্ষক সমাজের প্রচণ্ড প্রতিরোধের মুখে ৩ দিনের মাথায় সফিউল আজমকে ডিজি থেকে প্রত্যাহার করে তাকে পরিচালক (পরিকল্পনা) হিসাবে রাখা হয়। সিদ্দিক যোবায়ের আওয়ামী নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর সহচর প্রফেসর এহতেশামকে ডিজি হিসেবে পদায়িত করলে সমগ্র শিক্ষক সমাজ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ফলে তাকে ১৪ দিনের মাথায় অপসারণ করা হয়। এই টালমাটাল অবস্থায় শিক্ষা উপদেষ্টা বৃদ্ধ ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ ক্লান্ত হয়ে যান। আন্দোলনকারী শিক্ষক সমাজও বার বার আন্দোলন করে স্তিমিত হয়ে যায়। ঠিক এই সুযোগে ড. শেখ আব্দুর রশীদের ইচ্ছায় সিদ্দিক যোবায়ের ফ্যাসিস্টের দোসর ড. আজাদ খানকে ডিজি হিসেবে পদায়ন করেন।

শীর্ষনিউজ