
গাজায় রাতভর হামলা চালিয়ে ভোরে সেনাছাওনিতে ফিরেছিল ইসরাইলি সেনারা। ঠিক তখনই তাদের উপর নেমে এলো ভয়ঙ্কর প্রতিশোধ। হামাসের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হাতে বানানো বিস্ফোরকের আঘাতে উড়ে গেছে চার ইসরাইলি সেনা। এ ঘটনাকে কঠিন পরিস্থিতি হিসেবে বর্ণনা করেছে ইসরাইলি গণমাধ্যম।
গাজায় শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় নামানোর হুমকি দিয়েছিলেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী। কিন্তু উল্টো তাদের উপরেই নেমে এসেছে ভয়ঙ্কর টর্নেডো। এমন এক সময়ে এই আঘাত এলো যখন গাজা নগরী ছাড়তে বাসিন্দাদের সতর্ক করছেন ইসরাইল প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। শহরটি দখল করার জন্য তার সেনারা চালিয়ে যাচ্ছে ব্যাপক বোমাবর্ষণ।
আইডিএফ এর প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, গাজানগরীর শেখ রাদওয়ান এলাকার উপকণ্ঠে কাফর জাবালিয়াতে একটি ইসরাইলি সেনাছাওনিতে হামলা চালায় হামাসের তিন যোদ্ধা। সেনারা রাতে অভিযান শেষে ফিরে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে।
হামাসের যোদ্ধারা ছাওনির প্রবেশপথে একটি ট্যাংকের কাছে অবস্থান নিয়ে কমান্ডারের দিকে গুলি চালায়। কমান্ডারের মাথা তখন সাজোয়া যানটির খোলা হ্যাচের বাইরে ছিল। এরপর ট্যাংকের ভেতর একটি বিস্ফোরক ডিভাইস নিক্ষেপ করে তারা। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান চার ইসরাইলি সেনা।
সোমবার সন্ধ্যায় সৈন্যদের মৃত্যুর খবর ঘোষণার কয়েক মিনিট আগে নেতানিয়াহু জানান, গত দুই দিনে হামাসের ৫০টি টাওয়ার ধ্বংস করেছে ইসরাইল। গাজা নগরী অপারেশনের এটিই কেবল সূচনা বলে সতর্ক করেন তিনি। তেল আবিবের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ভিডিও বিবৃতিতে নেতানিয়াহু প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সমস্ত আস্তানা ধ্বংস করার অঙ্গীকার করেন।
এর আগে সোমবার ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কার্ডস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, গাজা নগরীর আকাশে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানবে। কিন্তু পরদিনই হামাসের হামলায় প্রাণ হারান চার সেনা।
ইসরাইল প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, নিহতরা হলেন স্টাফ সার্জেন্ট উরিল আমেদ, সার্জেন্ট অমিদ আরিয়ে রেগেব, সার্জেন্ট গাদি কোটাল ও লেফটেনেন্ট মাতান। তাদের সবার বয়স ১৯ থেকে ২১ বছরের মধ্যে। নিহতরা সবাই 401তম সাজোয়া ব্রিগেডের 52তম ব্যাটেলিয়নে কর্মরত ছিলেন। এছাড়াও নাহাল ব্রিগেডের 50তম ব্যাটেলিয়নের একজন সেনা এ ঘটনায় আহত হয়েছেন।
সামরিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত ইসরাইলি সেনার সংখ্যা দাঁড়ালো ৯০৪ জনে।