
বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বড় ধরনের প্রতারণা করেছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেড। কোম্পানিটি তালিকাভুক্ত হওয়ার আগে ও পরে নানাভাবে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। তালিকাভুক্ত হওয়ার আগে মুনাফা ও কোম্পানির পরিচালন সক্ষমতাকে ভিন্ন ভিন্নভাবে উপস্থাপন করার পাশাপাশি স্বতন্ত্র পরিচালকের অবস্থান গোপন করার চেষ্টা করেছে। আর তালিকাভুক্ত হওয়ার পর সংগৃহীত তহবিল ব্যবহারে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। এমনকি ওইসব অনিয়মের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সম্মতি নিতে ভোট চুরির আশ্রয়ও নিয়েছে কোম্পানিটি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) তদন্ত প্রতিবেদনে এমন অনিয়মের তথ্য উঠে এসেছে।
বিএসইসির তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, কোম্পানিটি তালিকাভুক্তির পর আইপিও-এর অর্থ ভিন্ন খাতে ব্যবহার, সময়মতো অর্থ ব্যয়ের নিরীক্ষিত প্রতিবেদন জমা না দেওয়া, নির্দিষ্ট সময়ে অর্থ ব্যবহার শেষ করতে না পারা এবং পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে আইপিও-এর অর্থ থেকে ঋণ দেওয়ার মতো অনিয়মে জড়িয়েছে। এছাড়া, এক আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহারের মাধ্যমে হাজারেরও বেশি বিনিয়োগকারীর ভোট চুরি করে গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা পাস করিয়ে নিয়েছে। চেক অথবা ব্যাংক লেনদেনের পরিবর্তে নগদ লেনদেন করে আইন লঙ্ঘন করেছে। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও ব্যয় বাড়িয়ে দেখাতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে।
কোম্পানি-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তারা কোনো অনিয়ম করেননি। কিছু কারণে আইপিও তহবিল ব্যবহার করতে দেরি হয়েছে। তারা এ বিষয়ে বিএসইসিতে ব্যাখ্যা দিয়েছে।
ঢাকা পোস্টকে এর বেশি তথ্য দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন কোম্পানির একাধিক কর্মকর্তা।
কোম্পানিটি তালিকাভুক্তির পর আইপিও-এর অর্থ ভিন্ন খাতে ব্যবহার, সময়মতো অর্থ ব্যয়ের নিরীক্ষিত প্রতিবেদন জমা না দেওয়া, নির্দিষ্ট সময়ে অর্থ ব্যবহার শেষ করতে না পারা এবং পরিচালকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে আইপিও-এর অর্থ থেকে ঋণ দেওয়ার মতো অনিয়মে জড়িয়েছে। এছাড়া, এক আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহারের মাধ্যমে হাজারেরও বেশি বিনিয়োগকারীর ভোট চুরি করে গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা পাস করিয়ে নিয়েছে। চেক অথবা ব্যাংক লেনদেনের পরিবর্তে নগদ লেনদেন করে আইন লঙ্ঘন করেছে। ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রেও ব্যয় বাড়িয়ে দেখাতে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধরনের কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজার থেকে টাকা নিয়ে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে। তালিকাভুক্ত হওয়ার আগে কোম্পানির অবস্থা ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখায়। আর আইপিও-এর অর্থ হাতে পেয়ে গেলে কোম্পানির অবস্থা দুর্বল হতে থাকে। মূলত, তারা পুঁজিবাজারের অর্থ নিজেদের মনে করে লুটপাট করে।
গোঁজামিল তথ্যে ৩০ কোটি টাকা উত্তোলন
কোম্পানিটি তাদের প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) চূড়ান্ত প্রসপেক্টাসে পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর যে তথ্য দিয়েছে তাতে অনিয়ম হয়েছে বলে বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, কোম্পানিটি ২০১৯ সালের দ্বিতীয়ার্ধে (১৫ জুন থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে) হঠাৎ করে পরিশোধিত মূলধন ৯৭ শতাংশ বা ১০৫ কোটি টাকা বাড়িয়েছে, যা তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে সন্দেহজনক মনে হয়েছে। প্রসপেক্টাসে উল্লেখিত আইপিও পূর্ববর্তী পাঁচ বছরের আর্থিক প্রতিবেদনেও কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ও শেয়ারপ্রতি নগদ পরিচালন প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) তথ্যে গরমিল পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। এছাড়া, প্রসপেক্টাসে কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দেওয়া হয়েছে। কোথাও বলা হয়েছে তাদের পর্ষদের কোনো পরিচালক তালিকাভুক্ত অন্য কোনো কোম্পানির পর্ষদে যুক্ত নেই, আবার কোথাও বলা হয়েছে স্বতন্ত্র পরিচালক তালিকাভুক্ত অন্য কোম্পানিরও পর্ষদ পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এভাবে একই প্রসপেক্টাসে দুই ধরনের তথ্য দিয়ে কোম্পানিটি প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, কোম্পানিটি তাদের চূড়ান্ত আইপিও প্রসপেক্টাসে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য দিয়ে এবং পর্ষদ পরিচালকের অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন দেখিয়ে বিএসইসির পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫-এর ধারা ১৫ লঙ্ঘন করেছে। বিএসইসি এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯ অনুসারে কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
আইপিও-এর অর্থে স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে ঋণ
কোম্পানিটি ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর আইপিও-এর ওই অর্থ থেকে সাউথইস্ট ব্যাংকের লে মেরিডিয়ান শাখায় তিন মাসের জন্য ছয়টি ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট চালু করে। ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর কোম্পানিটি আইপিও তহবিলের আমানতকে বন্ধক রেখে শান্ত এগ্রো অ্যান্ড ট্রেডিং ফার্মস লিমিটেডকে ১৩ কোটি টাকা ঋণ দেয়, যা কয়েকবারে উত্তোলন করা হয়েছে। এছাড়া, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজা-উর-রহমান সিনহার ছেলের প্রতিষ্ঠান শরীব ট্রেড সংস্থা (প্রাইভেট) লিমিটেডকেও সাউথইস্ট ব্যাংকের এফডিআর ভেঙে সাত কোটি টাকা ঋণ দেয় কোম্পানিটি। ওই ঋণকে এখন পর্যন্ত আদায় কিংবা খেলাপি হিসেবে দেখানো হয়নি।
তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, কোম্পানিটি তাদের চূড়ান্ত আইপিও প্রসপেক্টাসে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য দিয়ে এবং পর্ষদ পরিচালকের অবস্থান ভিন্ন ভিন্ন দেখিয়ে বিএসইসির পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫-এর ধারা ১৫ লঙ্ঘন করেছে। বিএসইসি এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯ অনুসারে কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে
বিএসইসির তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, আইপিও প্রসপেক্টাস এবং আইপিও সম্মতিপত্র অনুযায়ী প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থে এফডিআর কিংবা অন্য কোনো কোম্পানিকে ঋণ দেওয়ার অনুমোদন নেই। এক্ষেত্রে কোম্পানিটি আইপিও সম্মতিপত্র সংক্রান্ত শর্ত ৬নং এর ‘সি’ ধারা এবং বিএসইসি পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫-এর ২১নং ধারা লঙ্ঘন করেছে।
কারখানা নির্মাণ ও নতুন কারখানা অধিগ্রহণে অনিয়ম
আইপিও সম্মতিপত্রে উল্লেখিত কারখানা নির্মাণ ও অন্যান্য নির্মাণ বাবদ ১০ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয় পরিকল্পনার মধ্যে কোম্পানিটি ১০ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যবহার সম্পন্ন করেছে বলে তদন্ত কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তবে, গত বছরের ২ জুন বিএসইসির এই তদন্ত কর্মকর্তাদের দল কারখানা প্রাঙ্গণ পরিদর্শনে গেলে কেবল কয়েকটি ভাঙাচোরা ভবন দেখতে পায়। এছাড়া, একটি তিনতলা বিশিষ্ট ভবন দেখতে পায়, যেখানে কোম্পানির দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার পাশাপাশি কর্মকর্তাদের বসবাসের ব্যবস্থা রয়েছে। এর বাইরে নির্মাণাধীন একটি ভবন দেখতে পায় তারা। তবে, আইপিও প্রসপেক্টাসে উল্লিখিত কনজিউমার ব্র্যান্ড প্রোডাক্ট ইউনিটের কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পায়নি পরিদর্শক দল। কিন্তু কোম্পানিটি একটি কেমিক্যাল ইউনিট তাদের দেখিয়েছে, যেটিকে আইপিও প্রসপেক্টাসে উল্লিখিত এগ্রো কেমিক্যাল ইউনিট বলে জানানো হয়েছে। তবে, পরিদর্শক দল ওই ইউনিটে কোনো নামফলক খুঁজে পায়নি। এগুলো দেখিয়ে কোম্পানিটি দাবি করছে, তারা এই কাজের জন্য এরই মধ্যে ১০ কোটি ৪ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে কোনোভাবেই সেই তথ্য বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি।
ভবন নির্মাণের এই ব্যয়ের মধ্যে কোম্পানিটি কোয়ান্টাম ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডকে পাঁচ কোটি টাকা পে-অর্ডারের মাধ্যমে এবং দুই কোটি ৭৬ লাখ ৪৯ হাজার টাকা নগদ দিয়েছে বলে তদন্ত কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। এর বাইরে বন্ধন এন্টারপ্রাইজকে দুই কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট পে চেক এবং ২৭ লাখ ২৫ হাজার টাকা নগদ দিয়েছে। নির্মাণ কাজের অর্ডার পাওয়া কোম্পানি দুটি উল্লিখিত অর্থ বুঝে পেয়েছে কি না, তা জানতে তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হলেও এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া পর্যন্ত তার উত্তর পায়নি।
এদিকে, আইপিও সম্মতিপত্রে উল্লিখিত ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি নতুন কারখানা ও যন্ত্রপাতি অধিগ্রহণ করার প্রকল্পেও তেমন কোনো অগ্রগতি দেখতে পায়নি পরিদর্শক দল। যদিও কোম্পানিটি দাবি করছে, তারা এজন্য আট কোটি চার লাখ টাকা তৃতীয় পক্ষকে নগদ অগ্রিম হিসেবে দিয়েছে। এর মধ্যে ভবন নির্মাণ ও এ সংক্রান্ত কাজের জন্য তিন কোটি চার লাখ টাকা এবং বিদ্যুৎ প্রতিস্থাপনের জন্য এক কোটি ৬৪ লাখ টাকা দিয়েছে। এর বাইরে কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের ছেলের প্রতিষ্ঠান শরীব ট্রেড সংস্থাকে কারখানা ও যন্ত্রপাতি অধিগ্রহণের কাজে দুই কোটি ৪৮ লাখ ৪৬ হাজার টাকা দিয়েছে।
বিএসইসির তদন্তে উঠে আসা অভিযোগের বিষয়ে জানতে একমি পেস্টিসাইডসের কোম্পানি সচিব সবুজ কুমার ঘোষকে ফোন দেওয়া হলে প্রথমে তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, তাদের কোম্পানির বিরুদ্ধে যেসব অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে, এরই মধ্যে সে বিষয়ে বিএসইসিকে ব্যাখ্যা দিয়েছে তারা। পরে আইপিও-এর ফান্ড ভেঙে স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ফোনের সংযোগ বিছিন্ন করে দেন
বিএসইসির তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, কোম্পানিটি বিপুল পরিমাণ অর্থ নগদ লেনদেন করে আইপিও সম্মতিপত্রের শর্ত ৫-এর ‘সি’ ধারা লঙ্ঘন করেছে। পাশাপাশি এটি বিএসইসি পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫-এর ব্যত্যয়।
বিনিয়োগকারীর ভোট চুরি করে এজেন্ডা পাস
বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে, কোম্পানির গত বছরের ১০ জুন অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) এক হাজার ২৪৬ জন সাধারণ বিনিয়োগকারীর ভোট চুরি করে আইপিও তহবিল ব্যবহারের সময় বাড়ানোর এজেন্ডা পাস করা হয়েছে, যা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) আইটি বিভাগের তদন্তেও উঠে এসেছে। নিয়ম অনুসারে, কোনো এজেন্ডা পাস করাতে উদ্যোক্তা ও পরিচালক বাদে কমপক্ষে কোম্পানির ৫১ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীর সম্মতি থাকতে হয়। এক্ষেত্রে ২৮টি ভুয়া আইপি আইডি ব্যবহার করে ভোট প্রদানের মাধ্যমে এই এজেন্ডা পাস করিয়ে নিয়েছে কোম্পানিটি। ভোট চুরি করা বিনিয়োগকারীদের মোট শেয়ার সংখ্যা দেখানো হয় চার কোটি সাত লাখ। এর মধ্যে একটি আইপি দিয়ে সর্বোচ্চ ১২১ জনের ভোট দেওয়া হয়েছে।

গণমাধ্যমে ব্যাখ্যা দিতে অনাগ্রহ কোম্পানির
বিএসইসির তদন্তে উঠে আসা অভিযোগের বিষয়ে জানতে একমি পেস্টিসাইডসের কোম্পানি সচিব সবুজ কুমার ঘোষকে ফোন দেওয়া হলে প্রথমে তিনি ঢাকা পোস্টকে জানান, তাদের কোম্পানির বিরুদ্ধে যেসব অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে, এরই মধ্যে সে বিষয়ে বিএসইসিকে ব্যাখ্যা দিয়েছে তারা। পরে আইপিও-এর ফান্ড ভেঙে স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোম্পানিকে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ফোনের সংযোগ বিছিন্ন করে দেন।
এক মিনিট পর ফের ফোন দিলে কোম্পানির অর্থ বিভাগ থেকে একজন ফোন রিসিভ করে জানান, কোম্পানি সচিব এখানে নেই। একইসঙ্গে তিনি নিজে থেকেই কোম্পানি সচিবের পক্ষে কথা বলার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন। তবে, তিনি কোনো প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে সবটা বিএসইসি থেকে জানতে বলেন। পাশাপাশি গণমাধ্যমে কোনো ধরনের ব্যাখ্যা দিতে কোম্পানি দায়বদ্ধ নয় বলেও জানান।
বিশ্লেষকরা যা বলছেন
অর্থনীতিবিদ ও পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আইপিও-এর ফান্ড অপব্যবহারের এই চিত্র শুধুমাত্র একমি পেস্টিসাইডসেই নয়। বিএসইসির আগের দুই কমিশনের সময়কালজুড়ে যেসব কোম্পানি পুঁজিবাজার থেকে অর্থ নিয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগই ফান্ডের অপব্যবহার করেছে। দুর্বল ও তলাবিহীন কতগুলো কোম্পানিকে ওই সময়ে বাজারে আনা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের অর্থের অপব্যবহার রোধ করতে ওই সময়কার প্রত্যেকটি আইপিও-এর ফান্ড ব্যবহারের প্রকৃত চিত্র তদন্ত হওয়া উচিত।’
পুঁজিবাজার টাস্কফোর্সের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল-আমিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘বিগত সরকারের সময়ে অনেকগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত আইপিও বাজারে এসেছে। এক্ষেত্রে অডিট ফার্মগুলোর যেমন ঘাটতি ছিল, তেমন ইস্যু ম্যানেজার, নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং স্টক এক্সচেঞ্জেরও ঘাটতি ছিল। টাস্কফোর্স এখন এমন একটা সংস্কারের দিকে যাচ্ছে, যেখানে কেউ ‘দায়-সারা’ কাজ করতে পারবে না। সবাইকে একটা জবাবদিহিতার মধ্যে আনা হচ্ছে।’
বিএসইসির ভাষ্য
এ বিষয়ে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘একমি পেস্টিসাইডসের আইপিও ফান্ড ব্যবহার নিয়ে কোনো তদন্ত হচ্ছে কি না, সেটা আমার জানা নেই। যদি তদন্ত হয়ে থাকে তাহলে অপরাধ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’