
দেশের ভিতরে তিন শ্রেণির ভোটারের পাশাপাশি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার করা হবে পোস্টাল ব্যালট। এ ক্ষেত্রে অনলাইন নিবন্ধনের সুযোগ দেবে নির্বাচন কমিশন। আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসনভিত্তিক ব্যালট পেপার আনানেওয়ার কাজটি করা হবে নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে। এদিকে অল্প সময়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি, প্রচারণা, পোস্টাল ব্যালট আনানেওয়াসহ গণনা, ফলাফল পর্যন্ত কাজটি বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। ডাক বিভাগ পুরো কাজের তত্ত্বাবধানে থাকলেও নিয়ন্ত্রণ থাকবে ইসির অ্যাডহক কমিটির হাতে, যেখানে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা ও বিভাগের প্রতিনিধি থাকবেন।
অপরদিকে নির্বাচনে প্রবাসী, কারাবন্দি ও ভোটের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাসহ পোস্টাল ব্যালটে যারা ভোট দিতে ইচ্ছুক তাদের পেছনে পোস্টাল ব্যালটে প্রায় চার শ কোটি টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইসি সূত্র জানায়, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আলাদা করে ৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। তবে যাঁরা চাকরি বা অন্য কাজে দেশের ভিতরে নিজ ভোটার এলাকাতে বসবাস করছেন না তাঁদেরও ভোটাধিকার নিশ্চিতে নির্বাচনি বাজেটে পোস্টাল ব্যালটের জন্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এ এম এম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন ইসি এরই মধ্যে পোস্টাল ব্যালটের প্রাথমিক কর্মপদ্ধতি সেরে ফেলেছে। আরও পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়ে চলতি সেপ্টেম্বর থেকে প্রচারণায় নামার কথা রয়েছে ইসির। কোটির বেশি প্রবাসী থাকলেও এবার নিবন্ধন করতে পারবেন কেবল ভোটার হিসেবে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিরাই। আর নিবন্ধনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ বলেন, ‘পোস্টাল ব্যালটে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হবে। এ পদ্ধতি কীভাবে কার্যকর করা যায়, এর একটা খসড়া আমরা করেছি। এ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালালে প্রবাসীরা আগ্রহী হবেন এবং উল্লেখযোগ্য প্রবাসী ভোটার পাব বলে আশা করছি।’
যেভাবে ব্যবহার হবে পোস্টাল ব্যালট : প্রবাসীদের ভোট কীভাবে নেওয়া হবে সেই প্রশ্নে অনলাইন, প্রক্সি ভোট ও পোস্টাল ব্যালট- তিন পদ্ধতিই আলোচনায় ছিল। শেষমেশ পোস্টাল ব্যালট বেছে নেয় কমিশন। নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, ‘নবম কমিশন সভায় দেশে ও দেশের বাইরে পোস্টাল ব্যালটের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা হয়। প্রবাসে আমাদের বাংলাদেশি ভোটার যাঁরা আছেন, এবার তাঁদের ভোটাধিকার আমরা নিশ্চিত করতে চাই এবং মাধ্যমটা হবে পোস্টাল ব্যালট।
বর্তমানে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকলেও এ পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়নি।’ অতীতে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার বিধান থাকলেও সময়ের অভাবে ভোট গ্রহণ সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।