Image description
এ পদ্ধতিতে ব্যয় হবে ৪০০ কোটি টাকা, সময় লাগবে এক মাস

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন প্রবাসীরা। পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে তাদের ভোট গ্রহণ করা হবে। এছাড়া কারাবন্দি ও ভোটের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারাও একই পদ্ধতিতে ভোট প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। ইসি সূত্র জানায়, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আলাদা করে ৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। তবে যারা চাকরি বা অন্য কাজে দেশের ভেতরে নিজ ভোটার এলাকাতে বসবাস করছেন না তাদেরও ভোটাধিকার নিশ্চিতে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে হবে। এতে ব্যালট পাঠানো ও দেশে ফেরত আনা হবে নির্বাচনের একমাস আগে। এজন্য নির্বাচনি বাজেটে সব মিলিয়ে পোস্টাল ব্যালটে ব্যয় হবে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।

ইসির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিসি ক্যামেরা ও পোস্টাল ব্যালটের ব্যয় বাদ দিলে এবার দুই হাজার কোটি টাকা (কম-বেশি) দিয়ে সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব। ইসির রোডম্যাপে বলা হয়েছে, পোস্টাল ব্যালটে ভোটদান নিশ্চিতের জন্য এএফডি,এমওএফএ, এমওএইচএ, এমওইউ, বাংলাদেশ ডাকবিভাগ, ডিআইপি, এসবি, বিআরসি ইত্যাদি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। ৩০ সেপ্টেম্বর মধ্যে মোবাইল অ্যাপ তৈরি ও পরীক্ষামূলক (আউটকান্ট্রি ভোটিং- ওসিভি ও ইনকান্ট্রি ভোটিং- আইসিপিভি নিবন্ধন ও ট্রাকিং মডিউল) প্রতীক ও প্রার্থীদের সংযুক্ত করে চালাতে হবে। ১ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবরের পর্যন্ত মোবাইল অ্যাপের ট্রায়াল, নীরিক্ষা, ত্রুটি সংশোধন ও ডেভেলপমেন্টের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে। এছাড়া চলতি মাস থেকে ওসিভি ও আইসিপিভি এর জন্য প্রচারণা, উদ্ভুতকরণ ও ভোটার শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবে ইসি। যা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।

এতে আরও বলা হয়েছে, ১ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বরে মধ্যে ব্যালট পেপার, নির্দেশিকা ও ঘোষণাপত্র মুদ্রণ করা হবে। ওসিভি ও আইসিপিভির জন্য নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হবে ১১ নভেম্বর, যা চলবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। ডাকবিভাগ খামের কাস্টমাইজেশন করবে। ভোটারদের কাছে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে ২০ নভেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। তফসিল ঘোষণা হওয়ার পর প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ শেষ হলেও ভোট দিতে পারবে ওসিভি ও আইসিপিভির আওতায় ভোটাররা। ভোট প্রদান ও ব্যালট পেপার দেশে ফেরত পাঠাতে হবে নির্বাচনের এক মাস আগে। এরপর কমিশন প্রতিটি ব্যালটে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার নাম লিখে তা সিল প্রেরণ করে দেবে।

নির্বাচনি বাজেটের বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাসউদ বলেন, আমরা যে সিস্টেম করেছি, পোস্টালে একটা স্ট্যাম লাগিয়ে দেব। ভোটার বিদেশ থেকে অনলাইনে আমাদের ওয়েবসাইটে ঢুকে নাম লিস্ট করবেন বা দেশে থেকেও করতে পারবেন, একই সিস্টেম। একটা ইনকান্ট্রি, আরেকটা আউটকান্ট্রি। তিনি আরও বলেন, আগে ব্যালট পাঠালে সেই ব্যালট পেপার ফেরত আসে না, ভোট দিতেও পারে না, আর এলেও শেষের দিকে আসত। এখন সেখানে আমরা ব্যালট পেপার না দিয়ে যত আমাদের মার্কা আছে সব মার্কা দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। উনি মার্কা অনুযায়ী ভোট দেবেন।

একটি পোস্টাল আনা-নেওয়া করতে ব্যালটপ্রতি সরকারিভাবে ব্যয় হবে ৫০০ টাকার মতো আর বেসরকারিভাবে এটি দাঁড়াবে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা পর্যন্ত। বেসরকারি প্রতিনিধিরা জানান, ১২ দিনের মধ্যে পোস্টাল ব্যালট প্রবাসে ভোটারের কাছে পাঠানো ও ভোট শেষে ফেরত আনতে পারবে। এক্ষেত্রে সিল করা খাম ভোটার ও ইসি প্রতিনিধি ছাড়া কেউ খুলবে না, তাদের নিজস্ব লোকাল প্রতিনিধি ভোটারের কাছে পোস্টাল ব্যালট পৌঁছাবে এবং ভোটারকে ফোন করে ভোট দেওয়ার পর ফেরত আনবে। এজন্য একজন ভোটারের পোস্টাল ব্যালট আনা-নেওয়ায় সব মিলিয়ে ৪০-৪৫ ডলার খরচ হতে পারে।