
খুলনার সাংবাদিক ওয়াহেদ-উজ-জামান বুলুর মৃতদেহের সুরতহাল করা হয়েছে।
রূপসা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মুহিদুল হক সোমবার দুপুরে বলেন, “সুরতহাল প্রতিবেদনে বুলুর মুখ থেঁতলানো, দুই হাত ভাঙা ও গায়ে কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।”
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বলা যাবে বলে জানান তিনি।
রোববার রাত সোয়া ৮টার দিকে খুলনার খানজাহান আলী সেতুর (রূপসা সেতু) নিচ থেকে বুলুর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে স্বজনরা গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।
সাংবাদিক বুলু চ্যানেল ওয়ান, ইউএনবি, আজকের কাগজ, বঙ্গবাণী, দৈনিক প্রবাহ পত্রিকায় কাজ করেছেন। ৬০ বছর বয়সি বুলু সবশেষ দৈনিক সংবাদ প্রতিদিনের জ্যেষ্ঠ নিজস্ব প্রতিবেদক ছিলেন। তিনি খুলনা প্রেস ক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন বলে জানান খুলনা প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক।
সোমবার ময়নাতদন্তের পর খুলনা প্রেস ক্লাবে তার জানাজা হয়। পরে গোয়ালখালী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।
বুলুর শ্যালকের স্ত্রী নুরুন্নাহার পারভীন বলেন, রোববার সকালে তার বাসা থেকে বের হন বুলু। দুপুর থেকে বুলুর মোবাইল বন্ধ ছিল। রাতে লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে গিয়ে শনাক্ত করেন।
‘শিববাড়ি মোড়ের বুলু ভাই’ হিসেবেই সবার কাছে পরিচিত ছিলেন তিনি। মোড়ের অদূরেই ছিল তার বাসা। যদিও কয়েক বছর আগে ওই বাড়িটি বিক্রি হয়ে যায়। তিনি আর সেখানে থাকতেন না। ওই বাড়ি নিয়ে নিকট আত্মীয়দের মধ্যে ‘ঝামেলার’ কথা জানা যায়।
বুলু ছিলেন নিঃসন্তান। প্রায় মাস চারেক আগে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ স্ত্রী ‘নিখোঁজ’ বলে ফেইসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন তিনি।
বুলুর ছোট ভাই আনিসুজ্জামান দুলু বলেন, “পারিবারিকসহ নানান ঘটনায় বুলু ভাই চাপের মধ্যে ছিলেন। স্ত্রী তিন মাস নিখোঁজ। নারী সংক্রান্ত দুটি ঘটনায় তিনি মানসিক চাপে ছিলেন।”
তিনি আরও বলেন, “এসব চাপ থাকলেও তার মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। আমরা সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।”
সাংবাদিক বুলুর বন্ধু কামরুল হোসেন বলেন, “ঘটনার পর ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তাতে বুলুর মৃত্যু অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশের তদন্ত জরুরি মনে করছি।”