Image description

বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে সেই ঝড় অনুভূত হচ্ছে। সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে?

আজ সোমবার সকালে গুলশানের একটি হোটেলে বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ নামে একটি নতুন উদ্যোগের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। এ ছাড়া রাজনৈতিক নেতা, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত রয়েছেন।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের শুরুতে আমরা সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে যুক্ত হয়েছিলাম। কিন্তু এখন সেই সংস্কারের উৎসাহ-উচ্ছ্বাস অনেকটা স্তিমিত হয়ে গেছে। এটা কি আকাঙ্ক্ষার অভাব, নাকি স্বার্থের সংঘাত, নাকি অন্য কিছু? অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে? এ প্রশ্ন আমাদের মধ্যে বড় করে আসছে।’

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘সংস্কারের কারিগরি জ্ঞান অনেকেই দিতে পারেন, কিন্তু বাস্তবায়নের বিষয়টি আলাদা। তাই সংস্কারের এই চাহিদা তৈরি করার জন্য আমরা সামাজিক কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মিলিত হয়ে আজকের এই উদ্যোগ নিয়েছি।’

এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে সবার প্রত্যাশা ছিল বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার। তিনি প্রশ্ন তোলেন, এক বছরে সেই সংস্কার কার্যক্রম কত দূর এগোল? অন্তর্বর্তী সরকার তার অবশিষ্ট সময়ে সংস্কারকে আর কতটুকু এগিয়ে নিতে পারবে? রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে সংস্কারের আকাঙ্ক্ষার কতটুকুই-বা প্রতিফলিত হবে? এ বিষয়গুলো দেখার জন্য নাগরিক প্ল্যাটফর্ম থেকে বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ উদ্যোগ শুরু করছে, যার মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়া মানুষের কণ্ঠস্বর বা অংশগ্রহণ কতটা থাকে, সেটা দেখার চেষ্টা করা হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, সংস্কারের আলোচনা দীর্ঘদিন ধরেই আছে। কিন্তু যাঁরা সংস্কার করবেন, তাঁরা কতটা অনুধাবন করছেন? এখানে রাষ্ট্র ও সরকারের সক্ষমতা ও ইচ্ছার বড় বিষয় জড়িত। তা ছাড়া আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক এলিটদের সংস্কারবিরোধিতার বিষয় রয়েছে। তাই সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো কতটা অঙ্গীকারবদ্ধ, সেটাও দেখতে হবে।

আলোচনায় সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আগের অনেক সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়নি। এবার কি হবে, সেটার জবাব জরুরি। তবে এবার আমরা সাফল্যের বিষয়ে আশাবাদী। তাই সবাইকে এ কার্যক্রমে যুক্ত করেছি।’

সেমিনারে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন প্রতিনিধি সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।