Image description

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারে সংবিধান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), অন্যান্য নির্বাচনি আইনের পাশাপাশি নির্বাচনি আচরণবিধিতেও সুস্পষ্ট পরিবর্তন আনার সুপারিশ করছে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।

ভোটার উপস্থিতির ন্যূনতম সীমারেখা রাখার পাশাপাশি নির্ধারিত ভোটের হার না হলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার ভোট বাতিল করার ক্ষমতা ইসির হাতে রাখার সুপারিশ করা হচ্ছে। অন্যদিকে সিইসি ও ইসি নিয়োগে স্বচ্ছতা বিধান, না ভোটের প্রচলন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, গণভোট, তত্ত্বাধায়ক ব্যবস্থা, বিদ্যমান নির্বাচনপদ্ধতির পাশাপাশি সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি, সংসদের আসন সংখ্যা বাড়ানো, নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন, পাঁচ বছর পর পর দলের নিবন্ধন রিভিউ, তিন বছর দলে না থাকলে দলীয় মনোনয়ন নয়, নির্বাচনি প্রশাসন শক্তিশালী করাসহ ভোটের অনিয়ম রোধে একগুচ্ছ সুপারিশ থাকতে পারে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে। সংস্কার বাস্তবায়নে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ করবে কমিশন। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি শেষ। কাল এ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে। প্রতিবেদনে ১০-১২টি অধ্যায়ের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আইন, বিধি-বিধান যুক্ত থাকবে। এ বিষয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কাছে দেওয়া হবে।

কী থাকছে সুপারিশে : সূত্র জানিয়েছে, সিইসি ও ইসি নিয়োগ; এ ক্ষেত্রে সার্চ কমিটিতে সংসদের বিরোধী দল এবং তৃতীয় বৃহত্তম দলের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা; নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা, ক্ষমতা, ইসির দায়বদ্ধতা; নির্বাচন বাতিল করার বিষয়, রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ, ভোটের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের ১৯৯১ বিশেষ আইন, নির্বাচনি অপরাধ; সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ; নির্বাচন পর্যবেক্ষণ, গণমাধ্যম নীতিমালা; নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ, সংসদীয় আসন সংখ্যা বাড়ানো, নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন, না ভোটের বিধান, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনপদ্ধতি ও গণভোটসহ সার্বিক বিষয়ে প্রতিবেদনে সুপারিশ দিচ্ছে কমিশন। ইসি সংস্কার কমিশন- প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ দুই মেয়াদে সীমাবদ্ধ করা, সংবিধানের ৪৮ (৩) অনুচ্ছেদ, ইসি নিয়োগে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ নেওয়া বিধান বাদ দেওয়াসহ সংবিধান সংশ্লিষ্ট বেশি কিছু সংস্কার প্রস্তাব দিচ্ছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনের সঙ্গে সিইসি ও ইসি নিয়োগের বিষয়ে আইনের একটা খসড়াও দেবে এ সংস্কার কমিশন। একই সঙ্গে বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে, তিন নির্বাচনের অনিয়মের তদন্ত, তফসিল ঘোষণার পরে যে কোনো পর্যায়ে নির্বাচন স্থগিত করার ক্ষমতা ইসির হাতে রাখতে আরপিও সংশোধন করার প্রস্তাব দিচ্ছে সংস্কার কমিটি। নির্ধারিত সংখ্যক ভোট না পেলে বা ভোটার উপস্থিতি না হলে ওই (নির্বাচনি আসনের) ভোট বাতিলের ক্ষমতা ইসির কাছে রাখাসহ নতুন তফসিলে বাতিলকৃত আসনে ভোট করার সুপারিশ দেওয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেলেও পাঁচ বছর পর রিভিউ করার বিষয়েও সুপারিশ থাকবে। দল নিবন্ধন নিয়ে পাঁচ বছর পর দলের নিবন্ধন রিভিউ করবে। তিন বছর দলের সঙ্গে না থাকলে তাকে দলীয় নমিনেশন না দেওয়ার সুপারিশও করছে সংস্কার কমিশন।