
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় বিয়ের তিন মাস না যেতেই ভেঙে গেল নবদম্পতির সংসার। পরে নববধূর পরিবারের পক্ষ থেকে অপহরণের মামলা দিয়ে যুবককে কারাগারে পাঠিয়েছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
সজীবের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ জুন কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের সৈয়দাবাদ গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে সজীব মিয়ার সঙ্গে খাড়েরা ইউনিয়নের দেলীগ্রামের প্রবাসী আবু বকর সিদ্দিকের মেয়ে মোছাম্মৎ মাওয়ার বিয়ে হয়। দেনমোহর ধার্য করা হয় তিন লাখ টাকা। বিয়ের সময় কনের পরিবার জানায়, মাওয়ার ভাই মহিউদ্দিন সৌদি আরব পাঠাবেন সজীবকে। এ আশ্বাসে সজীবের পরিবার কনের পরিবারকে তিন লাখ টাকা দেয়।
আরও জানা গেছে, বিয়ের মাত্র দুই মাস পর সৌদি ভিসার জন্য ঢাকায় মেডিকেল টেস্টে অংশ নেন সজীব। রিপোর্টে ধরা পড়ে তিনি হেপাটাইটিসে আক্রান্ত। ফলস্বরূপ তাকে ভিসার জন্য ‘আনফিট’ ঘোষণা করা হয়।
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাওয়ার পরিবার জানায়, তারা আর সজীবের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না। কিছুদিন পর মাওয়া বাবার বাড়িতে চলে যান। রোববার (২১ আগস্ট) মাওয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে সজীবের বিরুদ্ধে ‘অপহরণ’-এর অভিযোগ এনে কসবা থানায় মামলা করা হয়। মামলার ভিত্তিতে পুলিশ সজীবকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
সজীবের মা তাছলিমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সৌদি নেওয়ার নামে প্রতারণা করে আমাদের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়েছে মেয়ের পরিবার। মেডিকেলে আনফিট হওয়ার পর ষড়যন্ত্র করে আমার ছেলেকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে কারাগারে পাঠিয়েছে। আমার ছেলে মাওয়াকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেছে, আড়াই মাস সংসারও করেছে। তারপরও কীভাবে ওরা অপহরণের মামলা দেয়? এতে সংসার ভেঙে গেল, আবার নির্দোষ ছেলেকে কারাগারে পাঠানো হলো। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোসাম্মৎ মাওয়া মা সাহারা বেগম তিনি কালবেলার সঙ্গে কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করে বলেন, যা হবে আদালতে।
কসবা থানার ওসি মো. আব্দুল কাদের বলেন, কনের পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং অভিযুক্ত সজীবকে থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক তদন্ত শেষে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এখন মামলার নথি ও প্রমাণ যাচাই-বাছাই চলছে। আদালতে যা উপস্থাপিত হবে তার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।