Image description
চরভদ্রাসনে নদীভাঙন : ধসে পড়ছে এইচবিবি সড়ক

ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসন উপজেলার টিলারচর এলাকার নদীভাঙন চলছে। পদ্মাভাঙনের ঝুঁকিতে পড়ছে ওই এলাকার মাদরাসা, মসজিদ এবং সরকারি এইচবিবি রাস্তা। চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন চরভদ্রাসন পদ্মাপাড়ের মানুষ। ইতোমধ্যেই, ধসে পড়ছে এইচবিবি সড়ক।

নদীভাঙ্গনের খবর পেয়ে গতকাল শুক্রবার চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের হাজীডাঙ্গী ও টিলারচর গ্রামে সরেজমিনে পরিদর্শনকালে হঠাৎ ভাঙ্গনের এ চিত্র দৃশ্যমান দেখা যায়। পাশাপাশি পদ্মা নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়ছে নদীপারের বহু পরিবার।
স্থানীয় জাকের হুরা বাজার এলাকার মো জাহেদ প্রমানিক ইনকিলাবকে বলেন, পদ্মায় ১৫ দিনের টানা পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে হাজীডাঙ্গী গ্রামের এইচবিবি পাকা সড়কের কিছু অংশ ধসে পড়াসহ এবং টিলারচর গ্রামে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ভাঙনের কবলে পড়েছে একটি বিদ্যালয়, একটি মসজিদ, মাদরাসা এবং বেশ কয়েকটি বসতঘর। এসব স্থাপনার অস্তিত্ব এখন ভয়াবহ হুমকির মুখে।

গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, হাজীডাঙ্গী গ্রামের পাকা সড়কের একাধিক স্থানে ধস দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও স্থানীয়ভাবে বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। টিলারচর গ্রামের নদী তীরবর্তী এলাকাতেও ব্যাপক ভাঙন দেখা গেছে, এ ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করলে যেকোন সময় নদীর পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

টিলারচর গ্রামের নদীপারের বাসিন্দা মো. রকমান মৌলবী, রবিন মল্লিক ও আজমত মিয়া জানান, পানির স্রোত এতটাই তীব্র যে, ভেসাল ও দোয়ারীর জন্য পুতে রাখা বাঁশ নিমিষেই নদীতে তলিয়ে গেছে। হাজীডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা আরজ আলী, আতর আলী ও আমেনা বেগম বলেন, বর্ষার পানিতে একটু একটু করে পাড় ভেঙে এখন নদী ঘরের পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে। নদীভাঙ্গনের দ্রত ব্যবস্থা না নিলে আমাদের ভিটেমাটি নদীগর্ভে চলে যাবে বলে রহমান মির মালোত জানান।

স্থানীয়, ইউপি সদস্য ঈমান আলী ম-ল জানান, পদ্মার ভাঙনের তীব্রতা বাড়ছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে হাজীডাঙ্গীর একটি মডেল মসজিদ, স্কুল, মাদরাসা ও বহু বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।

চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা খাতুন বলেন, ভাঙনের খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে এবং লিখিত চিঠিও পাঠানো হয়েছে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, হাজীডাঙ্গী গ্রামের ধসে যাওয়া পাকা সড়কের আপৎকালীন ভাঙন প্রতিরোধে ইতোমধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এক-দুই দিনের মধ্যেই কাজ শুরু হবে। তবে টিলারচর এলাকার অংশটি এখনো পানির নিচে থাকায় সেখানে কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। পানি কমলে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের কাজ শুরু হবে।

তিনি আরো জানান, চরভদ্রাসনের কয়েকটি পয়েন্টে মোট ৩.১৫ কিলোমিটার এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ভাঙনের বিষয় আমাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই।