Image description

গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামের মানুষের বহুল প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে তিস্তার বুকে দাঁড়িয়েছে ‘মওলানা ভাসানী সেতু’। কিন্তু উদ্বোধনের মাত্র একদিনের মধ্যেই সেতুর ল্যাম্পপোস্টে সংযোগ দেওয়া বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়ে যাওয়ায় সন্ধ্যা নামলেই অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে সেতুর পুরো অংশ। 

বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকেলে বিষয়টি প্রথম স্থানীয়দের নজরে আসে। স্থানীয়দের অভিযোগ, চোর চক্র সেতুর হরিপুর পয়েন্ট থেকে মাটি খুঁড়ে বিদ্যুতের তার কেটে নিয়ে গেছে। এর ফলে গত দুইদিন ধরে সেতুতে কোনো বাতি জ্বলছে না। এ ঘটনায় এলজিইডি কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও অবেহেলাকেই দায়ী করছেন এলাকাবাসী।

এর আগে, উদ্বোধনের দিন বুধবার রাতেও সেতুতে আলো জ্বলেনি। হাজারো মানুষ সেতু দেখতে এলেও অন্ধকারের কারণে পড়তে হয়েছে চরম বিড়ম্বনায়। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

যদিও এলজিইডির গাইবান্ধা নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী উদ্বোধনের রাতে মুঠোফোনে দাবি করেছিলেন, কন্ট্রোল মেশিন হঠাৎ নষ্ট হওয়ায় লাইট জ্বালানো সম্ভব হয়নি। তিনি জানান, সমস্যা সমাধানে ৩ থেকে ৫ দিন সময় লাগবে। কিন্তু শুক্রবার ক্যাবল চুরির বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এছাড়া ক্যাবল চুরির বিষয়টি জানতে বারবার মুঠফোনে যোগাযোগ করা হলে এলজিইডির সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী তপন কুমার চক্রবর্তী ফোন রিসিভ করেনি। 

তবে এলজিইডি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদফতরের উপসহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান মিলন বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ক্যাবল চুরি হওয়ায় সেতুর বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা যায়নি। তবে কী পরিমাণ ক্যাবল চুরি হয়েছে, তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গত বুধবার দুপুরে সেতুটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এক হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ ও ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের এই সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৯২৫ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার (জিওবি), সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ওফিড) অর্থায়নে এলজিইডির বাস্তবায়নে সেতুটি নির্মিত হয়েছে। সেতুতে মোট ৩১টি স্প্যান রয়েছে। সংযোগ সড়ক ও নদীশাসনসহ প্রকল্পে প্রায় ১৩৩ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।