
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মানিকগঞ্জ জেলার তিনটি আসনে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন দলের নির্বাচনী তৎপরতা বেড়েছে। বড় দল হিসেবে এ জেলায়ও বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী বেশি। এখানকার তিনটি আসনে আগেই প্রার্থী ঠিক করেছে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও খেলাফত মজলিস। একটি আসনে প্রার্থী ঠিক করেছে গণ অধিকার পরিষদ।
মানিকগঞ্জ জেলায় এখন সংসদীয় আসন তিনটি। তবে ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ছিল চারটি আসন। মানিকগঞ্জবাসীর একটি অংশের দাবি ছিল আবারও চারটি আসন বহালের। তবে নির্বাচন কমিশন সেই দাবিতে সাড়া দেয়নি।
মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর-দৌলতপুর-শিবালয়) : এ আসনে বিএনপির অন্যতম মনোনয়নপ্রত্যাশী এস এ কবির জিন্না। তিনি জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। ছাত্রদল থেকে উঠে আসা এই নেতা গত আওয়ামী লীগ আমলে বেশ কিছু মামলাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তখন থেকেই তিনি দলীয় ও ব্যক্তিগত কর্মসূচি নিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে মাঠে সক্রিয় আছেন।
মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর, হরিরামপুর ও সদরের একাংশ ) : সিংগাইর ও হরিরামপুর উপজেলা এবং মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পুটাইল, হাটিপাড়া ও ভাড়ারিয়া নিয়ে গঠিত এ আসনেও বিএনপি থেকে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। তার মধ্যে আছেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্ত। তাঁর বাবা সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও এ আসনের সাবেক এমপি শামসুল ইসলাম খান। ২০০৫ সালে তাঁর মৃত্যু হলে উপনির্বাচনে মঈনুল ইসলাম খান শান্ত এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন সিংগাইর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবিদুর রহমান খান রোমান, জেলা বিএনপির সাবেক উপদেষ্টা মো. আব্দুল হামিদ মিয়া ও সাবেক ছাত্রনেতা মো. রতন খান।
এখানে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ইবনে সিনা ট্রাস্টের ডিজিএম মুহাম্মদ জাহিদুর রহমান। এখানে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাদ্দিস শেখ মো. সালাহ উদ্দিনের অনুসারীরা বিভিন্নভাবে তৎপর। এ আসনে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রার্থী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ আইয়ুবী। ভোটযুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন মানিকগঞ্জ জেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মুফতি মো. শামসুল আরেফিন খান সাদী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুহাম্মদ আলী ও গণ অধিকার পরিষদের মো. মুসা মিয়া। জনতা পার্টি বাংলাদেশের মুখপাত্র ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ছারোয়ার মিলনও দল থেকে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন।
মানিকগঞ্জ-৩ (সদর ও সাটুরিয়া) : মানিকগঞ্জ সদর ও সাটুরিয়া উপজেলা নিয়ে গঠিত জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আসন এটি। এ আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশীর তালিকায় আছেন আফরোজা খানম রিতা। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও দলের জেলা কমিটির আহ্বায়ক। তাঁর বাবা প্রয়াত হারুনার রশিদ খান মুন্নু এ আসনের সাবেক এমপি ও দপ্তরবিহীন মন্ত্রী ছিলেন। এ ছাড়া জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জামিলুর রশিদ খান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা ও জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মোতালেব হোসেন মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মাওলানা মো. দেলওয়ার হোসাইন। এ ছাড়া সাবেক এমপি গণফোরামের সভাপতি মফিজুল ইসলাম খান কামাল, সাটুরিয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জাসদের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহজাহান আলী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ থেকে মাওলানা শামসুদ্দিন নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এখানে খেলাফত মজলিসের নেতা তাওহিদুল ইসলাম তুহিনের অনুসারীরাও মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।