
আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা ও দৈনন্দিন অভ্যাস আমাদের শরীরের ওপর অচেতন চাপ সৃষ্টি করে। অফিস, বাস বা গাড়িতে দীর্ঘ সময় বসা, রাতে অস্বস্তিকরভাবে শোয়া—সাধারণভাবে এসবই কোমর ও পিঠের ব্যথার কারণ হিসেবে পরিচিত।
তবে সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্যান্টের পেছনের পকেটে মানিব্যাগ রাখাও হতে পারে বড় অসুখের কারণ। বিশেষ করে পুরুষদের মধ্যে এই অভ্যাস কোমর ব্যথা, পিঠে অস্বস্তি এবং দীর্ঘমেয়াদে হাড়-স্নায়ুর জটিলতার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
মানিব্যাগের চাপ
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বলা হয়েছে, প্যান্টের ব্যাক পকেটে মানিব্যাগ রাখা বহু মানুষ কোমর, পিঠ ও পায়ের ব্যথায় ভুগছেন। কারণ, পেছনের পকেটের স্থানে সায়াটিক স্নায়ু থাকে। দীর্ঘ সময় বসার সময় মানিব্যাগ এই স্নায়ু ও পেশির ওপর চাপ সৃষ্টি করে। এতে কোমর ও শিরদাঁড়ার ব্যথা দেখা দেয়।
নিউইয়র্কের ডা. আর্নি আংগ্রিস্ট জানান, মোটা মানিব্যাগ পেছনের পকেটে রাখলে বসার ভারসাম্য নষ্ট হয়। এর প্রভাব সারা শরীরে পড়ে। পিঠ ও ঘাড়ে ব্যথা হয়, দীর্ঘ সময় বসে থাকলে কোমরও ধরে যায়। চিকিৎসকরা সতর্ক করেছেন, দীর্ঘদিন এই অভ্যাস চলতে থাকলে পক্ষাঘাতের মতো জটিলতার সম্ভাবনা রয়েছে।
কীভাবে বাঁচবেন এই সমস্যার হাত থেকে?
১. ব্যাক পকেটে মানিব্যাগ রাখার অভ্যাস ত্যাগ করুন। সামনের পকেটে বা কাঁধে ঝোলানো ব্যাগে মানি রাখলে শরীরও সুরক্ষিত থাকে।
২. হালকা জিনিসপত্র, কলম বা কাগজ রাখতে পারেন ব্যাক পকেটে, তবে মানিব্যাগ না।
৩. ব্যথা অনুভূত হলে টুক করে ওষুধ খাওয়া নয়, প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
৪. গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। গরম বা শীতকালে এ পদ্ধতি উপকারী। প্রয়োজনে পানিতে সামান্য লবণ মিশিয়ে গোসল করতে পারেন।
৫. নিয়মিত শরীরচর্চা করুন, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত পেশি পুনরায় সক্রিয় হয় এবং ব্যথা কমে।
৬. ব্যথা তীব্র হলে, একটি কাপড়ের মধ্যে কয়েকটি বরফের টুকরো রেখে ব্যথার স্থানে রাখুন, এতে আরাম পাওয়া সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
ডা. আর্নি আংগ্রিস্ট বলেন, ব্যাক পকেটে মোটা মানিব্যাগ রাখার ফলে শুধু কোমর নয়, পুরো শরীরের বসার ভারসাম্য নষ্ট হয়। তাই এটি অবশ্যই পরিহার করতে হবে। সামনের পকেটে বা কাঁধের ব্যাগে মানি রাখাই দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য নিরাপদ।
সূত্র : আনন্দবাজার ও অন্যান্য