Image description
 

রাজধানীর বাড্ডায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে সড়কের নাম পরিবর্তন করেছে স্থানীয়রা। তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেনা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। 

 

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছিলো ঢাকার পাঁচ এলাকায়, তার মধ্যে বাড্ডা অন্যতম। রাজধানীর জনবহুল এলাকা বাড্ডা, গণ–অভ্যুত্থানের ভয়াবহ সহিংসতার সাক্ষী হয়ে ওঠেছিলো। 

আন্দোলন দমনে বাড্ডা ও পার্শ্ববর্তী ভাটারা এলাকায় পুলিশ ও রাজনৈতিক ক্যাডাররা যখন একযোগে হামলা চালায় তখন ছাত্র জনতা ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। আন্দোলন দমনে ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে হাজার হাজার রাউন্ড গুলি ছুড়েছিলো পুলিশ ও দলীয় ক্যাডাররা। এতে বাড্ডা ও ভাটারায় ৫১ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলো। ছাত্র জনতার রক্তে রঞ্জিত হয়েছিলো বাড্ডার পথঘাট। 

এ বছরের ৫ আগস্ট জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে, বাড্ডার সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে মেরুল বাড্ডায় (ডিআইটি প্রজেক্টের ১২ নম্বর সড়ক) ছাত্র-জনতা শহীদি সড়কের নামফলক উদ্বোধন করা হয়। 

‘ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে শহীদের রক্তে গড়া পথ’ স্লোগানকে সামনে রেখে এলাকাবাসী এ নামফলক তৈরি করেন। সড়কের নাম ফলকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু এবং ও দলটির ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়য়ক সম্পাদক ড. এম এ কাইয়ুমসহ স্থানীয় বিএনপি নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ফাহাদুল ইসলাম ফারহাদ যুগান্তরকে জানান, ঢাকার মধ্যে বাড্ডা-রামপুরা ছিল মৃত্যুপুরী। সড়কে রক্তের স্রোত বয়ে গিয়েছিল, পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের কিলিং জোন হয়েছিল এই জায়গাটি। যেহেতু আমরা এই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা এবং এই গণহত্যা আমাদের সামনে হয়েছিল তাই আমরা বিবেক দ্বারা বারবার তাড়িত হয়। এইজন্য আমরা এলাকাবাসী ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সড়কটির নামকরণ করি। 

আরেক বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান শুভ্র বলেন, শত শত মায়ের বুক খালি হয়েছিল এই রাস্তায়, এখনো রক্তের দাগ শুকায়নি। অথচ ডিআইটি প্রজেক্টের ১২ নম্বর সড়কটি কিছুদিন আগে সাবেক কাউন্সিলর মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের পিতার নামানুসারে হাছেন উদ্দিন সড়ক ছিলো। পরবর্তীতে এলাকাবাসীর সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে সড়কের নাম পরিবর্তন করি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন অঞ্চল ১০ এর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, সড়ক নাকি গেট কিসের নামকরণ করেছে আমি জানি না। এলাকাবাসীর সম্মিলিত দাবি বা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হলেও রাস্তায় কেউ প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারবে না। চাইলেই কেউ রাষ্ট্রপ্রধান বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নাম দিয়ে হঠাৎ কোন জায়গায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারবে না। আমি এই সড়কের নামফলক বা উদ্বোধনের বিষয়ে কিছুই জানিনা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কেউ যদি সড়কে গেট তৈরি তা অবৈধ, আর এগুলো যদিও শহীদদের নামে করা হয়, তবুও আমি বলব এগুলোর শহীদদের অবমাননা।