Image description

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা বা এনএসআই ৫৪ বছরের প্রতিষ্ঠান। ১৯৭২ সালের ২৯ ডিসেম্বর এনএসআইর যাত্রা শুরু করে। ১৯৮২ সালের দিকে কালিদাস বৈদ্য ও চিত্তরঞ্জন সুতারের নেতৃত্বে ‘স্বাধীন বঙ্গভূমি’ নামে বাংলাদেশবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। প্রকাশ্যেই তারা খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, বরিশাল ও পটুয়াখালী নিয়ে ‘বঙ্গভূমি’ নামে হিন্দুদের জন্য আলাদা রাষ্ট্রের চক্রান্ত করেন। ভারতে আশ্রিতদের নিয়ে ‘বঙ্গসেনা’ নামে একটি সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলেন। কালিদাস বৈদ্য ও চিত্তরঞ্জন সুতারকে দিয়ে এই ষড়যন্ত্র করানোর পেছনে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ জড়িত ছিল। পরবর্তী সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার জন্যও ‘র’ সেখানে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। ‘র’-এর এই ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই সফলভাবে ভণ্ডুল করে দেয়। এরপর থেকেই ‘র’ নীলনকশা প্রণয়ন করে কীভাবে এনএসআইকে কবজা করা যায়। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সেই সুযোগটি তারা লাভ করে এবং ২০০৯ সালের পর থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সময়ে এনএসআই অনেকটা তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়।

মেজর জেনারেল (অব.) মনজুর যেভাবে এনএসআই সাজান এবং তার নিয়োগ জালিয়াতি

২০০৯ সালে মেজর জেনারেল (অব.) মনজুর আহমেদ এনএসআইর মহাপরিচালক পদে আসীন হয়ে তিনটি কাজ করেন। সেগুলো হলো- বিগত সরকারের সময় যারা ভারতবিরোধী অবস্থান নিয়েছিল তাদের বিভিন্ন মামলায় জড়িয়ে জেলে প্রেরণ (যেমন- দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা), নিরপেক্ষ, সৎ ও দেশপ্রেমিক কর্মকর্তাদের কোণঠাসা করা,

কেউ যাতে ভারত বা আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে না পারে তার ব্যবস্থা, সংস্থার সব পদে ও নতুন পদ সৃষ্টি করে ছাত্রলীগের ক্যাডার, আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য ও ভারতের অনুগত ব্যক্তিদের নিয়োগের ব্যবস্থা করা।

মহাপরিচালক মনজুর আহমেদ ২০১১ সালে প্রায় ১০০০ এনএসআই সদস্য নিয়োগের ব্যবস্থা করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও ভারতীয় দূতাবাস থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরো বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়া তদারকির জন্য তখন ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা থেকে কমপক্ষে দুই সদস্যের স্পেশাল টিম ঢাকায় অবস্থান করছিল। প্রাথমিকভাবে ৩৬ জনকে সহকারী পরিচালক পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত থাকলেও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরামর্শে ২০১৪ সালের নির্বাচন ও যুদ্ধাপরাধী বিচারের গোপন অপারেশন বাস্তবায়নের জন্য অগ্রিম ব্যবস্থা হিসেবে ১৪২ জন সহকারী পরিচালক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।

নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, এই নিয়োগের জন্য একটি সার্কুলার জারির পর সাধারণ ছাত্ররা আবেদন করলেও ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ কারো সুপারিশ ছাড়া অন্য নামে কারো প্রবেশপত্র (অ্যাডমিট কার্ড) বিতরণ করা হয়নি। তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সুপারিশেও প্রবেশপত্র দেওয়া হয়।

এনএসআইর নিয়োগের আগে প্রার্থীদের তালিকা করা হয় পাঁচটি স্থান থেকে। সেই পাঁচটি স্থান হচ্ছে- মধুর ক্যান্টিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, ভারতীয় দূতাবাস ও ভারতপন্থি সেনা কর্মকর্তা। সেই পাঁচ স্থানের কোনো একটি স্থান থেকে যদি নিয়োগে আগ্রহীরা ছাড়পত্র না পেতেন তাহলে তাদের এনএসআইয়ে নিয়োগ দেওয়া হতো না। জনকণ্ঠ, কালেরকণ্ঠ, ইত্তেফাক, ডেইলি সানসহ চিহ্নিত পত্রিকায় এই চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগের রাতেই ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতির হাতে যায় চলে যায় এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি।

সূত্র জানায়, নিয়োগের আগেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালের মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের ক্যাডারদের সিভি সংগ্রহ করা হয় এবং তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ ও সেক্রেটারি সিদ্দিকী নাজমুল আলম নির্বাচিত প্রার্থীদের ভাইভা নেন এবং সুপারিশপত্রসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে তালিকা করেন জাহাঙ্গীর কবির নানক, শেখ সেলিম ও মির্জা আজম। ক্যান্টনমেন্টে ‘র’-এর পক্ষে কাজ করা সামরিক কর্মকর্তাদের সুপারিশে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হয়। এর সঙ্গে শেখ হাসিনা ও ভারতীয় দূতাবাসের সুপারিশ যোগ করে সম্পূর্ণ তালিকা প্রস্তুত করে মনোনীত ব্যক্তিদের প্রবেশপত্র প্রদান করা হয়। মনোনীত ব্যক্তিদের শুধু পরীক্ষায় অংশগ্রহণ ও ভাইভাতে আহ্বান করা হয়। এভাবেই ২০১১ সালে প্রায় ১০০০ সদস্য নিয়োগ দেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ ও বিবিএ ফ্যাকাল্টির মাধ্যমে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। যাদের সুপারিশ আছে, তারাই এই পরীক্ষা দিতে পারেন। তাদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফলাফল এসএমএস-এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়। কঠোর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এই প্রিলি পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ করা হয় যাতে আগেই নির্বাচিত করে রাখা প্রার্থীরা যেন বাদ না যায়। লিখিত পরীক্ষার বিষয়টি বিইউপি বা এমআইএসটি’র অধীনে রাখা হয় যাতে এই নিয়োগ পরীক্ষার ষড়যন্ত্র সম্পর্কে কেউ প্রশ্ন করতে না পারে।

নিয়োগ জালিয়াতিতে চারটি বিষয়ে গুরুত্ব

সূত্র জানায়, এনএসআই নিয়োগের আগে চারটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেগুলো হলোÑচাহিদা নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন, প্রার্থী নির্ধারণ ও নিয়োগ প্রদান। চাহিদা নির্ধারণে গুরুত্ব দেওয়া হয় ‘র’ এবং আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন ও নীলনকশা বাস্তবায়নের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে জনবল নিয়োগ।

পরিকল্পনা প্রণয়নে গুরুত্ব দেওয়া হয়, জনপ্রশাসন থেকে জনবলের চাহিদা অনুমোদন, নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণের জন্য সব পক্ষকে নির্দেশনা প্রদান যা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক- ১২ সমন্বয় করেন। প্রার্থী নির্ধারণে যেসব কাজ করা হয় তা হলোÑ মধুর ক্যান্টিন, আওয়ামী লীগের কার্যালয়, ভারতপন্থি কর্মকর্তাদের সুপারিশ, ভারতীয় দূতাবাসের সুপারিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একত্রিতকরণ, চাকরির সার্কুলার প্রধান ও সুপারিশপ্রাপ্ত মনোনীত ব্যক্তিদের প্রবেশপত্র প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ। নিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে সর্বশেষ যে কাজটি করা হয় তা হলো, কঠোর গোপনীয়তার সঙ্গে মনোনীত ব্যক্তিদের ভাইভাতে আহ্বান করা এবং মনোনীতদের থেকে সর্বশেষ চাকরির যোগদানপত্র দেওয়া হয়।

সূত্র জানায়, সবচেয়ে দুর্নীতিপরায়ণ, বাজে, অস্বচ্ছ ও প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১১ সালের পর একইভাবে ২০১৪ সালে ৫৪ জন সহকারী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হলেও ৫৩ জন যোগদান করে। এছাড়াও এই পদসহ এ সময় প্রায় ৫০০ জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নিয়োগের উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা ও সরকারবিরোধী আন্দোলন দমন করা।

এনএসআই ডিজি (লে. জে.) শামসুল হকের আমলে আত্মীয়-স্বজন নিয়োগ

সূত্র জানায়, মেজর জেনারেল শামসুল হক এনএসআই ডিজি হওয়ার পর লে. জেনারেল হিসেবে সেনাবাহিনীর কিউএমজি (কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল) হন। এনএসআই থাকাকালীন ২০১৪ সালের আগস্টে মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। তিনি ২০১৬ ও ২০১৭ সালে দুটি ব্যাচ নিয়োগ দেন। সেখানে তিনি আগের মতো নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখেন। তিনি এই সুপারিশের তালিকায় নিজের আত্মীয়-স্বজনকে অন্তর্ভুক্ত করেন। সরকারি চাকরির ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি আত্মীয়-স্বজন নিয়োগের রেকর্ড করেন তিনি। কমপক্ষে ১০০ জন আত্মীয় নিয়োগ দেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) শামসুল হক।

মে. জেনারেল টিএম জোবায়েরের আমলে ব্যাপক নিয়োগ জালিয়াতি

জানা গেছে, ২০১৮ সালে মেজর জেনারেল (অব.) টি এম জোবায়েরকে এনএসআইর মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়। জোবায়ের মেজর জেনারেল (অব.) তারিক সিদ্দিকের খুবই আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। ‘র’-এর সঙ্গে তার কানেকশন এবং অজিত দোভালের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় তারিক সিদ্দিকের মাধ্যমেই। তিনি এনএসআইর ইতিহাসে কালো অধ্যায় রচনা করেন। তিনি সরাসরি ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের পরামর্শে ও মদতে কাজ করতেন। তার সময়ে এনএসআইর প্রধান কার্যালয় ‘র’-এর অফিসে পরিণত হয়।

তিনি ভারতীয় কর্মকর্তাদের প্রত্যক্ষ মদতে ২০১৮ সালের রাতের নির্বাচন বাস্তবায়ন করেন। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে অজিত দোভাল কমপক্ষে ২ হাজার ৫০০ জনবল নিয়োগের পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শ অনুযায়ী ২০২০, ২০২২, ২০২৩ সালে ২ হাজার ৪০০ জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নতুন জনবলের একটা অংশ ভারতের এজেন্ট ও ছাত্রলীগের ক্যাডার। এদের কারণেই আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পেরেছিল।

সূত্র জানায়, যে কোনো আন্দোলন শুরু হওয়ার আগেই তা নস্যাৎ করে দিত এনএসআই সদস্যরা। মেজর জেনারেল (অব.) টিএম জোবায়ের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে এনএসআইর কঠোর নজরদারির আওতায় নিয়ে আসেন। তিনি সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেন সব ক্যাম্পাসের হল ও ফ্যাকাল্টিসহ ছাত্র-জমায়েতের প্রতিটি স্থানে এনএসআইর এজেন্ট নিয়োজিত করে।

সূত্র জানায়, এনএসআইর প্রতিটি পদে ভারতীয় এজেন্ট ও আওয়ামী লীগের সমর্থকরা এখনো বহাল তবিয়তে অবস্থান করছে। কোনো এক অদৃশ্য কারণে এই নিয়োগ নিয়ে ছাত্র-সমন্বয়ক, উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টা কাউকে অবগত করা হয়নি। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে এনএসআইর কর্মকর্তা যারা সক্রিয় ভূমিকা রাখে তাদের পদচ্যুত না করে বরং ইনডেমনিটি দেওয়া হয়েছে। ২০২০, ২০২২ ও ২০২৩ সালের নিয়োগ জালিয়াতির মাধ্যমে যে এদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, এনএসআইর প্রধান কার্যালয়ে এর প্রমাণ সংরক্ষিত আছে যা অনুসন্ধান করলে জানা যাবে।

এনএসআইর নিয়োগ কমিটির সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন তারা হলেনÑএনএসআইর পরিচালক (প্রশাসন) কর্নেল জাকির হোসেন (পরিচয় নম্বর-বিএ-৩৬৫৯), এনএসআইর যুগ্ম-পরিচালক নাসির মাহমুদ গাজী (পরিচয় নম্বর-এ-০১৪৯) ও এনএসআইর অতিরিক্ত পরিচালক আফজালুন নাহার (পরিচয় নম্বর- এ-০০৪৩)। এই তিনজন গণহারে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেন।

সূত্র জানায়, প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভায় জালিয়াতির মাধ্যমে এনএসআইয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করা হতো। অনেক প্রার্থী বৈধ শিক্ষা সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়াই নিয়োগ পেয়েছেন। অবৈধ নিয়োগের মাধ্যমে যারা এনএসআইতে কর্মরত আছেন তারা ভারত ও আওয়ামী লীগের প্রতি অনুগত।

সূত্র জানায়, এনএসআই নিয়োগে মোটা অংকের টাকাও হাতিয়ে নিয়েছে ছাত্রলীগের সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ ও সেক্রেটারি সিদ্দিকী নাজমুল আলম। তারা ছাত্রলীগের ছাড়পত্রের জন্য প্রতি নিয়োগকারীর কাছ থেকে ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা করে নিত। যারা টাকা দিত না তারা ছাত্রলীগের কেউ না বলে এনএসআই সদর দপ্তরে চিঠি পাঠানো হতো।

এ বিষয়ে এনএসআইয়ের যুগ্ম-পরিচালক নাসির মাহমুদ গাজী (পরিচয় নম্বর-এ-০১৪৯) আমার দেশ-এর পক্ষ থেকে ফোন করে, ‘এনএসআইয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়োগে আপনি মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন’ প্রশ্ন করা হলে তিনি উষ্মা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমার কি নিয়োগে সেই ক্ষমতা আছে? এসব অভিযোগ বানোয়াট।’

তিনি ৫ আগস্টের পর খাগড়াছড়িতে বদলি হন। বর্তমানে তিনি সেখানেই কর্মরত আছেন।

এ বিষয়ে এনএসআইর অতিরিক্ত পরিচালক আফজালুন নাহার ফোন করলে তিনি প্রশ্ন শুনে উত্তেজিত কণ্ঠে জানান, ‘যাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসা করেন তাদের কে নিয়োগ দিয়েছে। তারা কী বলবে তখন আমাকে জানান? আমাকে কেন জিজ্ঞাসা করছেন। আরো একটি প্রশ্ন করার আগেই তিনি উত্তেজিত কণ্ঠে কলটি কেটে দেন।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর তিনি চিটাগং শাহ আমানত বিমানবন্দরে কর্মরত রয়েছেন। এনএসআইর পরিচালক কর্নেল জাকির হোসেন (পরিচয় নম্বর-বিএ-৩৬৫৯) বিষয়ে জানা গেছে, তিনি বাহিনী থেকে অবসরে গেছেন। তার ব্যক্তিগত একটি নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। টানা তিনদিন ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি। সূত্র জানিয়েছে, তিনি দেশ ত্যাগ করেছেন। ধানমন্ডি ও মিরপুর ডিওএইচএসে দুটি বাড়িতে যোগাযোগ করা হলে তাকে ওই ঠিকানায় পাওয়া যায়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনএসআইয়ে নিয়োগ পাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাবেক শিক্ষার্থী আমার দেশকে জানান, ‘তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মহসিন হল ছাত্রলীগের কমিটির সদস্য ছিলেন। সব সুপারিশের পরও তার ছাত্রলীগের এক নেতাকে ৭ লাখ টাকা দিতে হয়েছে।