
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের প্রভাবে ভারতের জলপাইগুড়ির গজলডোবা তিস্তা ব্যারাজ থেকে আবারও বিপুল পরিমাণ পানি ছাড়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকাল ৯টায় ৪৮টি স্লুইস গেটের প্রতিটি দিয়ে ১ হাজার ৮০০ কিউসেক করে পানি ছেড়ে দেওয়া হয়। এর আগের দিন বুধবার (১৩ আগস্ট) সকাল ও দুপুরে দুই দফায় মোট ৩ হাজার ২৭৫ কিউসেকের বেশি পানি ছাড়া হয়েছিল।
এর প্রভাবে বাংলাদেশ অংশের তিস্তা নদীতে পানি হু-হু করে বেড়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার (৫২.১৫ মিটার) ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, দেশের তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইস গেট খুলে রেখে সমতলে পানি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছে। তবে পরিস্থিতি অতিরিক্ত হলে ব্যারাজের পাশে অবস্থিত ‘ফ্লাড বাইপাস’ অটোমেটিক খুলে যাবে। বর্তমানে লাল সংকেত জারি রয়েছে এবং নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে।
নীলফামারী, লালমনিরহাট ও রংপুর জেলার তিস্তা অববাহিকার চর ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৮০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে রোপা আমনসহ বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার অন্তত ১৫টি গ্রাম এবং লালমনিরহাটের পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বহু চরাঞ্চল প্লাবিত।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জুলাইয়ের শেষ দিকে ও আগস্টের শুরুতে দুই দফা বন্যার পর এবার তৃতীয় দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। তারা ত্রাণ নয়, স্থায়ী সমাধান হিসেবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন। ডিমলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান বলেন, “তিস্তা পাড়ের চরের মানুষ এখন পানিবন্দি। পানি বাড়তে থাকায় আতঙ্কও বাড়ছে।” পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আগামী দুই দিন এ অঞ্চলে ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢল অব্যাহত থাকতে পারে।