Image description

সরকারের প্রভাবশালী উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির গুরুতর অভিযোগ উঠে আসায় রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক মঞ্জুরুল আলম পান্না জানান, এ অভিযোগের প্রমাণস্বরূপ একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এতদিন আমরা জেনেছি, এনসিপির অনেক শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, তদবির বাণিজ্য, নিয়োগ ও দখল বাণিজ্যের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এবং কিছু ক্ষেত্রে তার প্রমাণও সামনে এসেছে। এমনকি সরকারের কিছু উপদেষ্টার বিরুদ্ধেও এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে।

তবে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে যে ভয়াবহ চাঁদাবাজির তথ্য এবার উঠে এসেছে, তা এখনো পর্যন্ত কেবল অভিযোগের স্তরে রয়ে গেছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো—এই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করবে কে?’  সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।

পান্না জানান, ভাইরাল ভিডিওটি তৈরি করেছেন গুলশানের কোটি টাকার চাঁদাবাজি মামলায় জড়িত বলে অভিযুক্ত জানে আলম অপু। ধারণা করা হচ্ছে, অপু আটক হওয়ার আগে ৩৫ মিনিটের এই স্বীকারোক্তিমূলক ভিডিওটি নিরাপত্তার জন্য কারো মাধ্যমে প্রকাশ করে গিয়েছিলেন।

ভিডিওতে অপু জানিয়েছেন, তিনি নিজেই চাঁদার টাকার ব্যাগ নিতে গিয়েছিলেন এবং অভিযানে অংশ নেওয়ার সময় একজন উপদেষ্টার সঙ্গে তার সরাসরি কথা হয়। জানে আলমের বক্তব্য অনুযায়ী, অভিযানের আগের রাতে গুলশানের এক হোটেলের নিচে বাইক ও হেলমেট পরে থাকা এক ব্যক্তি। যাকে তিনি স্থানীয় সরকার বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলে দাবি করেছেন। অপুর প্রশ্ন, একজন উপদেষ্টা কেন রাত ৪টায় গুলশানের রাস্তায় আসবেন এবং আমার সঙ্গে কথা বলবেন? অপুর দাবি, অভিযানে যাওয়ার আগেই গুলশান জোনের ডিসি ও এসিকে জানিয়ে পুরো প্রসেস অনুসরণ করা হয়েছিল।
কিন্তু কেন এই অভিযান এবং আসিফ ভূঁইয়ার উপস্থিতি গণমাধ্যমে আসেনি, সে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ভিডিওটিতে জানে আলম অভিযোগ করেছেন, এই ঘটনায় শুধু আসিফ ভূঁইয়া নন, আরও ভাইয়েরা জড়িত এবং এটি ওপেন সিক্রেট। তিনি দাবি করেন, গত বছর যে ব্যক্তি ৫০০ টাকার স্কুটিতে চলতেন, তিনি এখন দামি মোটরসাইকেল চালান, ফাইভ স্টার হোটেল ছাড়া বসেন না।

ভিডিওতে অপু তার বক্তব্যে জানান, তাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এবং তাই এই ভিডিওটি আগেই প্রকাশ্যে আনার সিদ্ধান্ত নেন। যাতে পরবর্তীতে অন্য কোনো ‘স্ক্রিপ্ট’ তৈরি করে তার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় না করা হয়।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, একজনকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার মতো কী অপরাধ হয়েছে? শুধুই চাঁদাবাজির অভিযোগে এমন দীর্ঘ রিমান্ড কি যৌক্তিক? তার দাবি, রিমান্ডে এনে অভিযুক্তদের মুখে সাজানো বক্তব্য বসানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই ভিডিওর সঙ্গে একটি সিসিটিভি ফুটেজও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে এক ব্যক্তি হেলমেট পরে মোটরসাইকেলে এসে জানে আলমের সঙ্গে কথা বলছেন। অপুর দাবি, সেই ব্যক্তি উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। 

 

মঞ্জুরুল আলম পান্না বলেন, ‘অনেকে বলবেন, এটি আসিফ ভুইয়াকে ফাঁসানোর চক্রান্ত। তবে ঘটনাটি কি একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায়? সরকারদলীয় উপদেষ্টার বিরুদ্ধে এমন ভিডিওসহ অভিযোগ অবশ্যই চাঞ্চল্যকর।’ তিনি আরও যোগ করেন, এনসিপির অনেক শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধেও অতীতে নিয়োগ বাণিজ্য, দখল বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এসেছে। তখন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তবে যখন ভিডিও ভাইরাল হয়, তখন শোকজ করা হচ্ছে।