
চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল অফিসার পদে নিয়োগ পেয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. পেয়ার আহমেদের ছেলে ফাতিন ইলহাম বিন পেয়ার। ফাতিন বেসরকারি এমএইচ শমরিতা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বেসরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীকে নিয়োগ দেওয়াকে ঘিরে সমালোচনা চলছে। যদিও ওই পদে নিয়োগের জন্য সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করা প্রার্থীও ছিলেন।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাঁবিপ্রবির মেডিকেল সেন্টারের মেডিকেল অফিসার নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও যোগ্যতার মানদণ্ড উপেক্ষা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তাব্যক্তি ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিয়োগে প্রভাব বিস্তার করেছেন। যদিও চাঁবিপ্রবি উপাচার্যের দাবি, নিয়োগপ্রক্রিয়ার সঙ্গে তিনি সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। তার ছেলে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েই নিয়োগ পেয়েছেন।
জানতে চাইলে চাঁবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. পেয়ার আহমেদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘মেডিকেল অফিসার পদে আমার ছেলে প্রার্থী হওয়ায় আমি লিখিতভাবে আরেকজনকে সভাপতি বানিয়েছি। আমার ছেলে লিখিত এবং ভাইভাতে প্রথম হওয়ায় নিয়োগ পেয়েছে। এখানে স্বজনপ্রীতির কোনো বিষয় নেই। নিয়োগে আমার কোনো প্রভাব ছিল না।’
জানা গেছে, ১৮ মার্চ ১৫ ক্যাটাগরির ৩৪ পদে সংশোধিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে চাঁবিপ্রবি কর্তৃপক্ষ। বিজ্ঞপ্তির সাত নম্বরে থাকা মেডিকেল অফিসার পদে ২৩ জন আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্যে দুইজনের আবেদন বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তীতে কাগজপত্র যাচাই শেষে ২১ জনকে প্রাথমিকভাবে যোগ্য বলে বিবেচিত করা হয়। এই ২১ জনের মধ্যে ১৮ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে ১০ জনকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়। তাদের মধ্যে থেকে অধ্যাপক ড. পেয়ার আহমেদের ছেলে ফাতিন ইলহাম বিন পেয়ারকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, ফাতিন ইলহামের নিয়োগ যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেজন্য চাঁবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. পেয়ার আহমেদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: আইয়ুব আলীকে নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি মনোনয়ন করেন। অধ্যাপক পেয়ার আহমেদ জবির একই বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ছেলের নিয়োগ পাকাপোক্ত করতেই নিজ বিভাগের অধ্যাপককে সভাপতি মনোনয়ন করেছেন তিনি বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে চাঁবিপ্রবির এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অধ্যাপক পেয়ার আহমেদের ছেলের প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই জানে। এখানে ভিসির ছেলে হিসেবে ফাতিন ইলহাম বিন পেয়ারের নিয়োগ অনেকটাই নিশ্চিত ছিল। বিষয়টি যথাযথ তদন্ত করলে অনিয়মের বিষয়টি উঠে আসবে।’