
রংপুরের কাউনিয়ায় শহীদবাগ ইউনিয়নের ভূতছাড়া গ্রামের ভেতর দিয়ে ভেলুপাড়া বাজার পর্যন্ত সড়কটির বেহাল দশা। শুকনো মৌসুমে ধুলোবালি আর বর্ষায় কর্দমাক্ত হয়ে পথচারীদের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। দুই কিলোমিটার কাঁচা দীর্ঘদিনেও পাকা না হওয়ায় জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার এ রাস্তায় ধানের চারা লাগিয়ে এর ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভূতছাড়া গ্রামবাসী।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার শহীদবাগ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ভেলুপাড়া বাজার থেকে জলিলের বাড়ি পর্যন্ত কাঁচা রাস্তার দৈর্ঘ্য প্রায় দুই কিলোমিটার। প্রবল বৃষ্টি হলে এ রাস্তায় মাঝে মাঝে হাঁটু সমান কাঁদাপানি জমে। এ কাঁদাপানি মাড়িয়ে স্কুল-কলেজ মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। পথচারীদের চলাচলে অর্বনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জরুরি রোগী বহনে অ্যাম্বুলেন্স ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সময়মতো ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। লাশ দাফনের জন্য গোরস্থানে যেতেও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় এলাকাবাসীকে।
ভুতছাড়া গ্রামের হাজার হাজার একর জমির ফসল কৃষকেরা এ রাস্তা দিয়েই আনা-নেওয়া করেন। কৃষিপণ্য বাজারজাত করতেও একই সড়ক ব্যবহার করতে হয় তাদের। এজন্য ভেলুপাড়া বাজার থেকে জলিলের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তায় ধানের চারা লাগিয়ে ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ করেছেন স্থানীয়রা। তারা রাস্তাটি দ্রুত পাকাকরণের দাবি জানান।
এলাকার বাসিন্দা ইদ্রিস আলী বলেন, আমার জীবনে এ রাস্তার সংষ্কার কাজ করতে দেখিনি। উন্নয়ন বঞ্চিত ভূতছাড়া এলাকার অধিকাংশ মানুষ কৃষক। তাদের উৎপাদিত ফসল বৃষ্টির দিনে কাঁদাপানি মাড়িয়ে হাটবাজারে নেওয়া কষ্টকর হয়।
রাস্তায় আমন চারা লাগানোর সময় এমদাদুল হক, করিম উদ্দিন, রাসেদ মিয়া আক্ষেপ করে বলেন, যে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা কষ্টকর, সেই রাস্তায় ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বহুবার বিষয়টি কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হলেও তারা আশ্বাস ছাড়া কিছুই দেয়নি। ফলে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ থেকেই রাস্তায় আমন ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম জানান, রাস্তাটি পাকাকরণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে যত দ্রুত সম্ভব টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিদুল হক জানান, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে, বরাদ্দ এলে যত দ্রুত সম্ভব রাস্তা পাকাকরণের কাজ শুরু করা হবে।