
ভারতের মহারাষ্ট্রে দেহব্যবসা চক্রের কবলে পড়ে ভয়াবহ যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১২ বছর বয়সী এক বাংলাদেশি শিশু। তিন মাস ধরে দুই শতাধিক ব্যক্তি তাকে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ মিলেছে।
রাজ্যের ভাসাইয়ের নাইগাঁও এলাকায় পরিচালিত এক বিশেষ অভিযানে শিশুটিকে উদ্ধার করে মহারাষ্ট্রের মিরা-ভায়ান্দার ভাসাই-ভিরা (এমবিভিভি) পুলিশের মানবপাচারবিরোধী ইউনিট। উদ্ধার অভিযানে সহায়তা করে বেসরকারি সংস্থা এক্সোডাস রোড ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন ও হারমনি ফাউন্ডেশন। গত ২৬ জুলাই এই অভিযান চালানো হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
হারমনি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আব্রাহাম মাথাই জানান, জিজ্ঞাসাবাদের সময় মেয়েটি বলেছে—প্রথমে তাকে গুজরাটের নাদিয়াদ এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তিন মাসে অন্তত ২০০ জন পুরুষ তাকে যৌন নির্যাতন করে। শিশুটি এখনও কৈশোরে প্রবেশ করেনি, কিন্তু এই চক্র তার শৈশবকে নির্মমভাবে ধ্বংস করেছে।
পুলিশি তদন্তে জানা যায়, স্কুলে এক বিষয়ে ফেল করার পর বাবা-মায়ের বকাঝকা এড়াতে পরিচিত এক নারীর সঙ্গে পালিয়ে যায় শিশুটি। পরে ওই নারী গোপনে তাকে ভারতে পাচার করে এবং দেহব্যবসায় নামিয়ে দেয়। আব্রাহাম মাথাই অভিযুক্ত সব ব্যক্তিকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
এমবিভিভির পুলিশ কমিশনার নিকেত কৌশিক বলেন, পুলিশ পুরো নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ কিশোর-কিশোরীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।
আব্রাহাম মাথাই আরও বলেন, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। প্রতিটি উদ্ধার অভিযানের পেছনে থাকে এমনই এক শিশু, যাকে প্রথমে ব্যর্থ করেছে তার নিজের পরিবার এবং পরে পুরো সমাজ। বাবা-মায়েরা অনেক সময় ভালো উদ্দেশ্য নিয়েই কঠোর আচরণ করেন, কিন্তু অজান্তেই যেখানে বোঝাপড়ার সেতু দরকার, সেখানে দেয়াল তৈরি করে ফেলেন।
স্থানীয় সমাজকর্মী মধু শংকর জানান, তিনি প্রায়ই ভাশি ও বেলাপুর এলাকায় ছোট কন্যা শিশুদের ভিক্ষা করতে দেখেন। অনেককে ছোটবেলায় গ্রাম থেকে চুরি করে শহরে আনা হয়, পরে পতিতাবৃত্তিতে ঠেলে দেওয়া হয়। কখনো কখনো তাদের দ্রুত বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছাতে হরমোন ইনজেকশনও দেওয়া হয়।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া