Image description

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী ফাইরুজ সাদাফ ওরফে অবন্তিকার (২৪) আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ। এতে তার সহপাঠী রায়হান সিদ্দিকী (আম্মান)কে অভিযুক্ত করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

গত বছরের ১৫ মার্চ রাতে কুমিল্লা নগরের বাগিচাগাঁও এলাকায় নিজ বাসায় ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন অবন্তিকা। মৃত্যুর আগে দেওয়া ওই পোস্টে তিনি সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী রায়হান আম্মান সিদ্দিকীকে আত্মহত্যার জন্য দায়ী করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে হয়রানি ও উৎপীড়নের অভিযোগ আনেন। পরদিন ১৬ মার্চ রাতে অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম (শবনম) কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা করেন। এতে দ্বীন ইসলাম, রায়হান সিদ্দিকীসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়। ঘটনার পর উভয় আসামি গ্রেপ্তার হলেও পরে জামিনে মুক্তি পান।

প্রায় দেড় বছর পর গতকাল রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তিনি জানান, তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় দ্বীন ইসলামকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। দীর্ঘ তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা মিলিয়ে ২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। অবন্তিকার মুঠোফোনে থাকা ছবি, স্ক্রিনশট, মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপের বার্তা, ফেসবুকে দেওয়া ‘সুইসাইড নোট’ পর্যালোচনা এবং ফরেনসিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চূড়ান্ত অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

দ্বীন ইসলামকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অবন্তিকার মা তাহমিনা বেগম। তিনি বলেন, ‘অবন্তিকা মৃত্যুর আগে ফেসবুক পোস্টে দ্বীন ইসলামকে অভিযুক্ত করেছে। এর চেয়ে বড় সাক্ষী আর কী হতে পারে? তাহলে দ্বীন ইসলাম কীভাবে বাদ পড়ল?’ 

তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘তদন্তের নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখন পর্যন্ত কারও শাস্তি নিশ্চিত করেনি। প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ করেও মেয়েকে বাঁচাতে পারিনি। সেই কর্মকর্তারা কীভাবে এ মৃত্যুর দায় এড়াতে পারে? পুলিশ সঠিকভাবে তদন্ত করলে দ্বীন ইসলামকে কোনোভাবেই রেহাই দিত না।’

তাহমিনা বেগম জানান, মেয়ের মৃত্যুর নেপথ্যে জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি হবে কি না, তা নিয়েই তার সংশয় ছিল। তিনি বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান।