
পটুয়াখালীর বাউফলে রাজনৈতিক বিরোধকে কেন্দ্র করে দোকানঘরে আগুন লাগানোর অভিযোগে মব সৃষ্টি করে অভি (১৪) ও শান্ত (১৫) নামে দুই কিশোরকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্মমভাবে লাঠিপেটা করা হয়। ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্যাতনের শিকার ওই কিশোরদেরই আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। শনিবার (৯ আগস্ট) রাতে উপজেলার বগীর খাল তুলাতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি ছোট মুদি দোকানের মিটার ব্লাস্ট হয়ে আগুন লাগে। তবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এরপরেই দোকানদার মাহবুব ও তার লোকজন অভি ও শান্তকে আগুন লাগানোর সন্দেহে আটক করে। আটকের পরে মব সৃষ্টি করে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয় কিশোরদের। নির্মম লাঠি পেটার ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখেন নির্যাতনকারীরা। স্থানীয় বিএনপির দুইটি গ্রুপের বিরোধ নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। বছর সময় ধরে দুই গ্রুপ প্রায়ই সংঘর্ষ হামলা মামলায় জড়িয়ে পরছে। বিরোধের রাজনীতির ফায়দা নেয়ার জন্য নির্যাতনের শিকার হলেন ঘুরতে বের হওয়া দুই কিশোর বন্ধু।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, কিশোরদের মারধর করে আগুন লাগানোর স্বীকারোক্তি আদায় করা হচ্ছে এবং বিরোধী রাজনৈতিক পক্ষের নাম উচ্চারণ করানো হচ্ছে।
কালাইয়া ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক দুই কিশোরকে টাকার বিনিময়ে আগুন লাগাতে পাঠিয়েছে ক্যাপশন লিখে নির্যাতনের সেই ভিডিও ফেসবুকে প্রথম পোস্ট করে ছাত্রদলের কর্মী ফরহাদ রেজা।
এদিকে সেসময় ঘটনাস্থলে পৌঁছে নির্যাতনের শিকার কিশোরদেরই জিজ্ঞাসাবাদ করেন বাউফল থানার এসআই ইব্রাহীম মোল্লা। তার সামনেই নির্যাতনকারী কিশোরদের ধমকায়। পরে কিশোরদেরই আটক করেন এসআই। কোনো ধরনের চিকিৎসাও দেয় না তাদের। প্রায় ২০ ঘণ্টা আটক রাখার পরে রবিবার বেলা শেষে মুক্তি দেয়া হয় ভুক্তভোগী দুই কিশোরকে।
এ বিষয়ে উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহীম মোল্লা গণমাধ্যমকে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগে মবের ঘটনা হয়েছে। আমরা গিয়ে শুধু নিয়ে আসছি। আমি পরে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। আগুন লাগানোর অভিযোগে থানায় আনা হয়েছিল। হাসপাতালে নেয়া হয়নি, কারণ তারা বেশি আহত হয়নি। এমনিতে চিকিৎসা দিছি। আপোষ মীমাংসা মাধ্যমে দুইপক্ষ সমাধান করেছে বলে মামলা হয়নি বলে জানায় তিনি।