
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) লোন শাখার দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শতাধিক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীর মোটরসাইকেল ও কম্পিউটার ক্রয় ঋণের কিস্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ব্যাংকে জমা দেওয়ার পরিবর্তে ভুয়া জমা স্লিপ দেখিয়ে তাঁরা প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। যদিও তারা অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, আত্মসাৎ নয়, হিসাবে গরমিল হয়েছে।
অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের পেনশন সেলের উপপরিচালক মো. রাজিব মিয়া ও একই শাখার ল্যাব অ্যাটেন্ডেন্ট আবু ছালেহ মো. ইছা। অভিযোগটি সামনে আসার পর পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
হিসাব শাখা সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সাল থেকে পবিপ্রবির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য জিপিএফের ১০ শতাংশ কর্তনের তহবিল থেকে রূপালী ব্যাংক পবিপ্রবি শাখার মাধ্যমে মোটরসাইকেল ও কম্পিউটার ক্রয় ঋণ চালু হয়। ঋণগ্রহীতারা শর্ত অনুযায়ী কিস্তি পরিশোধ করলেও অভিযোগ উঠেছে, দুই কর্মকর্তা সে টাকা জমা না দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আত্মসাৎ করেন।
সম্প্রতি অভ্যন্তরীণ অডিটে হিসাবের গরমিল ধরা পড়লে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। পরে অভিযুক্তরা ভুল স্বীকার করে ৩২ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর নামও এ ঘটনায় এসেছে, যাঁরা ঋণ পরিশোধের ভুয়া রশিদ পেয়েছেন।
এর মধ্যে উপ-রেজিস্ট্রার (প্ল্যানিং) মো. খাইরুল বাসার মিয়া, পরিবহন শাখার সেকশন অফিসার সবুর খান, হেলপার আবু জাফর, ফটোমেশিন অপারেটর শামীম খান, অডিট সেলের পরিচ্ছন্নতাকর্মী ফরিদা বেগম, অ্যাম্বুলেন্সচালক আলম ও বাজেট শাখার অফিস সহায়ক মাসুদও রয়েছেন।
ল্যাব অ্যাটেন্ডেন্ট আবু ছালেহ মো. ইছা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এটি আত্মসাৎ নয়, হিসাবের গরমিল। শিগগিরই তা ঠিক হয়ে যাবে। কারও টাকা হারাবে না।’ আরেক অভিযুক্ত মো. রাজিব মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব শাখার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আর্থিক অসামঞ্জস্যের কারণে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিষয়টির তদন্ত চলছে।’
২ কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা টাকা উদ্ধারের কৌশল নিয়েছি। টাকা উদ্ধার হওয়ার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’