
চট্টগ্রামের পটিয়ায় ‘এস আলম মুক্ত’ ব্যাংকের চাকরিচ্যুত কর্মীদের আন্দোলনের মুখে ৪ ঘণ্টার বেশি সময় সব ধরনের ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ ছিল। আজ রবিবার (১০ আগস্ট) সকাল ৯টা থেকে উপজেলার সরকারি-বেসরকারি অন্তত ২০টি ব্যাংক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান তারা। পরে বেলা একটার দিকে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের সঙ্গে আলোচনার পর এই কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়। এরপর উপজেলায় সব ব্যাংকের লেনদেন ও সেবা চালু হয়েছে।
পটিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারহানুর রহমান বেলা পৌনে ২টার দিকে বলেন, বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংকের চাকুরিচ্যুতরা সকাল থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের সামনে অবস্থান নিয়েছিল; যার কারণে ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকরা প্রবেশ করতে পারেননি। পুলিশ প্রশাসনসহ আমরা সকাল থেকে আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলেছি এবং বেলা ১টার দিকে প্রথমে সোনালী ব্যাংক এবং পর্যায়ক্রমে সবগুলো ব্যাংকের সামনে থেকে তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিয়েছি। এখন সকল ব্যাংকিং কার্যক্রম চলমান আছে।
জানা গেছে, চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে ব্যাংক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় পটিয়ায় সব ব্যাংকের শাখা কার্যালয়ে লেনদেনসহ ব্যাংকিং সেবা বন্ধ হয়ে পড়ে। আন্দোলনকারীরা কোনো ব্যাংকের এটিএম বুথও গ্রাহকদের ব্যবহার করতে দেননি। চাকরিচ্যুত কর্মীরা বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। গত বছরের আগস্টে সরকার পরিবর্তনের পর তাঁরা চাকরিচ্যুত হন।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, কোনো কারণ ছাড়াই প্রায় সাত হাজার কর্মীকে এসব ব্যাংক থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এর অধিকাংশই চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার বাসিন্দা। তাই তাঁরা বেশ কিছুদিন ধরে চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
আন্দোলন চলাকালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পৌর সদরের থানার মোড়ের একটি কার্যালয়ে আন্দোলনরত ব্যক্তিদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানুর রহমান, চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আসাদুজ্জামান, পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান ও পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান। বৈঠকের পর কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আলোচিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিভিন্ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকার সময় নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের ছাঁটাই করা হয়।