Image description

উচ্চমূল্যের তাপে নিত্যপণ্যের বাজারে ফের ভাপ ছুটেছে। লাগামহীনভাবে বাড়ছে পেঁয়াজ ও ডিমের দাম। সব ধরনের সবজি ও মুরগির দাম চড়া। চালও বিক্রি হচ্ছে সেই বাড়তি দামেই।

বাজারে মূল্যস্ফীতির এমন চাপে আরো হিমশিম খাচ্ছে সীমিত আয়ের মানুষ।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকাল বৃহস্পতিবার বাজারদরের তথ্য বলছে, সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরায় দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিমের দাম ডজনে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ১৪৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আদা কেজিতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে মানভেদে ১৮০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার, বাড্ডা ও জোয়ারসাহারাসহ বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরায় প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা দরে  বিক্রি হচ্ছে, এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা কেজি। বেড়েছে ডিমের দামও। প্রতি ডজন ডিম এখন ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও প্রতি ডজন ডিম ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হয়।

আদার দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে মানভেদে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রসুনের দাম তুলনামূলক কম। দেশি রসুন ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি এবং আমদানীকৃত রসুন ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা।

রাজধানীর বাড্ডা বাজারের বিক্রেতা মো. হারুন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আড়তেই পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১৫ টাকার মতো বেড়েছে। এতে খুচরায় ৮০ টাকার নিচে পেঁয়াজ বিক্রি করা যাচ্ছে না।

ডিমের দামও দুই দফায় বেড়ে ১৪৫ টাকায় উঠেছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পেঁয়াজের উৎপাদনস্থল ফরিদপুরে ১০ দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম মণপ্রতি এক হাজার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। দাম বেড়ে পাইকারি পর্যায়ে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকা দরে।

ফরিদপুরের কানাইপুরের ব্যবসায়ী তপন কুমার জানান, বর্তমানে বিদেশি পেঁয়াজের আমদানি নেই। এ ছাড়া দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ তুলনামূলক কম। এতে চাহিদার সঙ্গে মিলছে না। এ কারণে দাম বেড়েছে।

রাজধানীর জোয়ারসাহারা বাজারে কেনাকাটা করতে আসা হেলেনা খাতুনের কালের কণ্ঠকে বলেন, পেঁয়াজ ও ডিমের বাজারে নতুন করে সিন্ডিকেট ঢুকেছে। কোনো ধরনের কারণ ছাড়াই মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি পণ্যই কেজি ও ডজনে ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারে জোরালো অভিযানের পাশাপাশি এই সিন্ডিকেট ভাঙতে এখনই পেঁয়াজ আমদানি শুরু করতে হবে। তা না হলে পেঁয়াজের কেজি  কয়েক দিনের মধ্যে শতকে উঠে যাবে।

সবজিবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে বেশ কিছু সবজির দাম আরো বেড়েছে। বেগুন প্রতি কেজি মানভেদে ৮০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ১০০, বরবটি ৮০ থেকে ১০০, কাঁকরোল ৮০, পটোল ৫০ থেকে ৬০, ঢেঁড়স ৬০, ধুন্দল ও চিচিঙ্গা ৭০ থেকে ৮০, টমেটো মানভেদে ১৫০ থেকে ১৮০, শসা ৮০ থেকে ১২০, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা। চালকুমড়া প্রতিটি ৬০ টাকা, লম্বা লাউ প্রতিটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ থেকে ২৪০ টাকা।

মুরগির দামও চড়া। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, লাগাতার বৃষ্টির কারণে বাজারে মুরগির সরবরাহ কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে পাইকারি ও খুচরা বাজারে মুরগির দামে প্রভাব পড়েছে।