Image description
 

ঢাকায় বসে অফিস করা বিষয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেছেন, দীপু মনির অন্যায় আবদার মেনে না নেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়েছেন। আমি ১৭-১৮ ঘণ্টা কাজ করেছি।

 
 
তার বিরুদ্ধে আমি প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেছিলাম। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দীপু মনি এগুলো ছড়িয়েছেন।

 

দুদকের করা মামলায় বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালতে জামিন শুনানিকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এদিন নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম।

আসামিপক্ষে আইনজীবী শাহনাজ আক্তার জামিন আবেদন করেন। দুদকের পক্ষে আইনজীবী দেলোয়ার জাহান রুমি জামিনের বিরোধিতা করেন।

শুনানিতে আইনজীবী শাহনাজ আক্তার বলেন, নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ কোনো অর্থ আত্মসাৎ করেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে বিধি মোতাবেক কাজ করেছেন। তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে কোনো কাজ করেননি। বয়স্ক বিবেচনায় যেকোনো শর্তে জামিন দিলে তিনি পলাতক হবেন না।

শুনানির একপর্যায়ে বিচারক কলিমউল্লাহকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আপনি কোন সালে ভিসি হয়েছেন?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘তৎকালীন সরকার আমাকে ২০১৭ সালে ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়। ’

তখন বিচারক ফের বলেন, ‘আপনি তো ফুলটাইম ঢাকায় থাকতেন। আপনি ১৩৫২ দিনের মধ্যে ১১১৫ দিন ঢাকায় থেকেছেন?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘দীপু মনি অন্যায় আবদার করতেন। এটা মেনে না নেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে অপবাদ দিয়েছেন। আমি ১৭-১৮ ঘণ্টা কাজ করেছি। তার বিরুদ্ধে আমি প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেছিলাম। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে দীপু মনি এগুলো ছড়িয়েছেন। ’

বিচারক জানতে চান, ‘চার বছরে উন্নয়ন খাতে কোনো টাকা পেয়েছেন?’ জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার আগের ভিসি নুর নবীর সময় ৯৯ কোটি টাকার কাজ চলমান ছিল। আমি দায়িত্ব নিয়ে কাজ চলমান রেখেছি। ’

দুদকের আইনজীবী দেলোয়ার জাহান রুমি বলেন, ‘তিনি ঢাকায় থাকতেন। টকশো করতেন নিয়মিত। তিনি কীভাবে ১৭-১৮ ঘণ্টা কাজ করেন?’ এ সময় কলিমউল্লাহ বলেন, ‘আমি রাতের বেলা টকশো করতাম। ’

তখন বিচারক জানতে চান, তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা আছে কি না? দুদক জানায়, অন্য কোনো মামলা নেই। এ সময় বিচারক আসামির উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আছে, সেটা তদন্ত হলে পুরোটা বেরিয়ে আসবে। ’

এক পর্যায়ে কলিমউল্লাহ বলেন, ‘আমি কোনো চিঠিপত্র পাইনি। আমাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ডাকা হয়নি। সকালে বাসা থেকে আমাকে পুলিশ নিয়ে আসছে। এক পোশাকে একাই চলে এসেছি। ’

এ সময় বিচারক বলেন, ‘কবরে-জেলখানায় একাই যেতে হবে। দুনিয়া থেকে যখন যাবেন সঙ্গে কেউ যাবেন না। যারা দুর্নীতি করে তারা কবরেও একা, জেলখানায় একা যাবেন। আপনি কী করেছেন তা আলিমুল গায়েব জানেন, আপনিও জানেন। কিছুদিন পর দুদক জানবে। আপনাকে জেলখানায় যেতে হবে। আপনি কারাবিধি অনুযায়ী সুবিধা পাবেন। কোনো ওষুধপত্র প্রয়োজন হলে আপনাকে দেওয়া হবে। ’

এরপর তাকে আদালত থেকে হাজতখানায় নেওয়া হয়।  

এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

গত ১৮ জুন দুদকের সহকারী পরিচালক মিনহাজ বিন ইসলাম বাদী হয়ে কলিমউল্লাহসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে।