
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এক তরুণীকে ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক কৌতূহল দেখা দিয়েছে। কে এই তরুণী, যিনি গুরুত্বপূর্ণ এ মুহূর্তে প্রধান উপদেষ্টার ঠিক পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং ঘোষণাপত্র পাঠের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যও দিয়েছেন?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি হলেন শহীদ মাহামুদুর রহমান সৈকতের বোন সাবরিনা আফরোজ শাবন্তী। গত বছর ১৯ জুলাই সংঘটিত অভ্যুত্থানের সময় নিহত হন সৈকত, যাকে আজ ‘জুলাই শহীদ’ হিসেবে স্মরণ করা হয়।
ঘোষণাপত্র পাঠ শুরুর ঠিক আগমুহূর্তে সাবরিনা আফরোজ শাবন্তী আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “এক বছর আগে ১৯ জুলাই, যখন আমার ভাইয়ের নিথর দেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পেলাম, তখন তার মাথায় রক্তাক্ত ব্যান্ডেজ। চিকিৎসা প্রতিবেদনে লেখা ছিল—গানশট। আমার ভাই ছিল ছয় ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার। এই উচ্চতা ছিল বাবার গর্ব, কিন্তু সেটিই যেন ওর জন্য কাল হলো।”
তিনি আরও বলেন, “আজকে যখন দেখি আমরা শুধু একটি পরিবার নই, পুরো দেশের পরিবার হয়ে উঠেছি—তখনই একটু স্বস্তি পাই। একসময় যখন দেশের ভবিষ্যৎ মনে হতো অন্ধকারাচ্ছন্ন, তখন এই সফল গণঅভ্যুত্থান আমাদের দেখিয়েছে নতুন আলো, নতুন স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে যেন আমরা কেউ পথ হারিয়ে না ফেলি।”
এরপর বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে, জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ শুরু করেন। এ সময় অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সমবেত জনতার সামনে পাঠ করা হয় সেই দলিল, যা ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের স্মারক ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত।
‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রস্তুত করা হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তত্ত্বাবধানে, যেখানে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামত স্থান পেয়েছে।
এই ঐতিহাসিক ঘোষণার মুহূর্তে শহীদের পরিবারের সদস্য হিসেবে শাবন্তীর উপস্থিতি ও বক্তব্য অনুষ্ঠানকে দিয়েছে বিশেষ তাৎপর্য, যা গণআন্দোলনের মানবিক প্রেক্ষাপটকে আরও গভীর করেছে।
শীর্ষনিউজ