Image description

জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনে চোখে মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন বহু মানুষ। তাদের মধ্যে ৩৯ জন সম্পূর্ণভাবে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) এক প্রতিবেদনে। জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্যক্রম মূল্যায়ন করতে গিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করে সংস্থাটি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এই প্রতিষ্ঠানটি জুলাইয়ে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলনে আহত ১,০৭৪ জনকে চিকিৎসা দিয়েছে। এর মধ্যে ৭৯৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, আর ২৭৮ জন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যান।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:

  • সম্পূর্ণ চোখ হারিয়েছেন: ৩৯ জন
  • এক চোখে আংশিক ক্ষতি: ৪৫০ জন
  • সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছেন: ৬৫ জন
  • বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে: ৯ জন
  • বর্তমানে ভর্তি: ১২১ জন
  • ডিসচার্জ পেয়েছেন: ৬৭৫ জন

চিকিৎসার অংশ হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চীন, নেপাল, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে পরামর্শ নিয়েছে এবং কিছু গুরুতর রোগীকে বিদেশে পাঠানো হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী চ্যালেঞ্জ:

  • চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানের ঘাটতি
  • প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের সংকট
  • যানবাহন ও বাজেট সীমাবদ্ধতা
  • রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম

আইএমইডির প্রস্তাবনা:

  • দৃষ্টিশক্তি হারানো ব্যক্তিদের আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ভাতা
  • আংশিক দৃষ্টিশক্তি হারানোদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা
  • চিকিৎসা প্রত্যয়ন সনদ প্রদান, যা আর্থিক সহায়তার বিকল্প হতে পারে

ভবিষ্যতের জন্য ৮টি করণীয় সুপারিশ:

  • জরুরি সংকট ব্যবস্থাপনা ইউনিট গঠন
  • আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি
  • চক্ষু প্রতিস্থাপন ও পুনর্বাসন কেন্দ্র স্থাপন
  • মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা
  • চিকিৎসা সরঞ্জামের মানোন্নয়ন
  • মানবসম্পদ বৃদ্ধি
  • বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা চালু রাখা
  • চিকিৎসা প্রত্যয়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন

অবকাঠামোগত সমস্যা:

  • বেজমেন্টে সবসময় পানি জমে, মালামাল সংরক্ষণ ও গাড়ি পার্কিং সম্ভব নয়
  • বৃষ্টিতে হাসপাতালের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ে
  • কিচেনে এক্সহস্ট ফ্যান সঠিকভাবে বসানো হয়নি
  • সিভিল ও ইলেকট্রিক কাজ অসম্পূর্ণ
  • পঞ্চম তলায় ওয়ার্ডের ওপর দিয়ে পয়ঃনিষ্কাশনের পাইপ নেওয়ায় ময়লা পানি চুইয়ে পড়ে
  • আবাসিক ভবনে সেন্ডফিলিং ও পয়ঃনিষ্কাশন নেই
  • ড্রেনেজ ও আবর্জনা ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত নিম্নমানের

প্রতিবেদনের সারাংশ অনুযায়ী, চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট সংকটময় পরিস্থিতিতে যে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে, তা প্রশংসনীয় হলেও স্থায়ী সমাধান ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জরুরি পদক্ষেপ প্রয়োজন।

শীর্ষনিউজ