চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে শুক্লা দে টিকলি নামে এক হিন্দু এনজিওকর্মীকে হত্যার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে তথ্য যাচাইকারী সংস্থা রিউমার স্ক্যানার।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ফ্যাক্ট চেকিং ওয়াচডগটি জানায়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে শুক্লা দে টিকলি নামে এক হিন্দু নারীকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করে প্রচারিত হচ্ছে।
প্রকৃতপক্ষে মানসিক চাপের কারণে আত্মহত্যার একটি ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে।
ওই দাবির তদন্তে দেখা গেছে, যমুনা টেলিভিশনের ওয়েবসাইটে ‘চট্টগ্রামে এক নারী এনজিও কর্মীর লাশ উদ্ধার’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড বলে প্রচারিত নারীর ছবির সাথে উক্ত প্রতিবেদনে ব্যবহৃত নারীর ছবির মিল রয়েছে। এছাড়া প্রতিবেদনে আরো জানা যায় যে, ছবিতে থাকা মহিলার নাম শুক্লা দে।
তিনি রূপসা সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মাঠকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
৪ জানুয়ারি রাতে উপজেলার শ্রীপুর-খড়দ্বীপ ইউনিয়নের পালপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার স্বজনরা এ প্রতিবেদককে জানান, প্রতিষ্ঠান ঋণের কিস্তি আদায়ের জন্য তার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিল। এ কারণে হতাশা থেকে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
আরো জানা গেছে যে শুক্লার স্বামী সিদুল পাল এই ঘটনায় তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানের চার কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
মামলার বিবৃতিতে তিনি অভিযোগ করেছেন যে, শুক্লা ২০২৩ সালের মে মাসে প্রতিষ্ঠানের কানুনগোপাড়া শাখায় মাঠকর্মী হিসেবে যোগদান করেন। প্রতিষ্ঠানটি এলাকার মানুষকে ক্ষুদ্রঋণ সরবরাহ করে। ৫ আগস্ট থেকে কিস্তি আদায় ধীরগতিতে চলছে। এর ফলে বেশ কয়েক মাস ধরে শুক্লা এবং প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে।
গত নভেম্বরে, প্রতিষ্ঠানটি শুক্লার মাসিক বেতন থেকে বকেয়া কিস্তির টাকা কেটে নেয়। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, ঋণের কিস্তি আদায়ের জন্য মানসিক চাপ এবং নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে শুক্লা আত্মহত্যা করেছিলেন। পরবর্তী তদন্তে একই ঘটনা সম্পর্কে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত আরেকটি প্রতিবেদন থেকে একই তথ্য বেরিয়ে আসে।
রিউমার স্ক্যানার বলেছে, শুক্লা দে নামে একজন এনজিওকর্মীর আত্মহত্যার ঘটনাটি একটি সাম্প্রদায়িক হত্যাকাণ্ড বলে ইন্টারনেটে প্রচারিত হচ্ছে, যা বিভ্রান্তিকর।
সূত্র : বাসস