Image description

লালমনিরহাটের পাটগ্রামের দহগ্রাম সীমান্তের শূন্যরেখার মধ্যে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশের বর্ডারগার্ডকে (বিজিবি) কোনো কিছু না জানিয়ে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেছে। এ নিয়ে বিএসএফ ও বিজিবি উভয় সীমান্তে অতিরিক্ত সৈন্য মোতায়েন করায় গোটা সীমান্তজুড়ে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার সকাল থেকে বাংলাদেশ-ভারত প্রধান পিলার ডিএমপি ৮ নম্বরের উপপিলার ৪৬ থেকে ৩৭ নম্বর সীমান্তের প্রায় অর্ধকিলোমিটারের মধ্যে বিএসএফ ৩০ থেকে ৩৫ জন নির্মাণ শ্রমিককে দিয়ে লোহার অ্যাঙ্গেল দিয়ে তৈরি খুঁটির মধ্যে প্রায় ৪ ফুট উচু কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করে। শূন্যরেখার দেড় শত গজের শেষ অংশে স্থানীয়রা এসব স্থাপন করতে দেখে বিজিবিকে খবর দেয়! ৫১ রংপুর বিজিবি ব্যাটালিয়নের পানবাড়ি ও দহগ্রাম ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বেড়া স্থাপনে বাধা দেয়। কিছু সময় নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখলেও পরবর্তীতে কয়েকশত বিএসএফ সদস্য এবং লোকজন নিয়ে আবারও বেড়া স্থাপনের কাজ করতে থাকে।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সীমান্তে বিএসএফের অসংখ্য সদস্য মোতায়েন করেছে ভারত। গোটা দহগ্রাম ইউনিয়ন সীমান্তে বিজিবিকেও সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

এদিকে দহগ্রাম সীমান্তের শূন্যরেখায় আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করার ঘটনায় এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ বিরাজ করছে।

দহগ্রাম সীমান্তবর্তী এলাকার ইউপি সদস্য গোলাম রাব্বানী আমার দেশকে বলেন, বিএসএফ এর তৎপরতা রুখতে আমরা সদা প্রস্তুত রয়েছি। যে কোন পরিস্থিতিতে আমরা দেশ রক্ষার স্বার্থে ঝাপিয়ে পড়বো। বিজিবির উপর আমাদের আস্থা আছে, আমরা বিজিবির সাথে আছি।

বিজিবি ও সীমান্তের স্থানীয় সূত্র আরো জানায়, ভারতের কোচবিহার রাজ্যের ৬ রাণীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের করুণ ক্যাম্পের বিএসএফের সদস্যরা আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন না মেনে শূন্যরেখার দেড়শো গজের একদম শেষ অংশে কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করেছে।

স্থানীয় ফরিদ মেম্বার জানান, বিএসএফের আগ্রাসী তৎপরতায় আমরা সীমান্তবাসীরা সব সময় আতঙ্কে দিনাতিপাত করে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা বিজিবিকে সহায়তা করব।

সরেজমিনে দেখা যায়, সীমান্তের শূন্যরেখা বরাবর আধা কিলোমিটারে প্রায় তিন ফুট উঁচু কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করা হয়েছে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি), রংপুর ৫১ ব্যাটালিয়নের সহকারী পরিচালক (এডি) ওমর খসরু বলেন, সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে বিএসএফকে বাধা দেওয়া হয়েছিল। বেড়া উঠিয়ে নিতে হবে এ বিষয়ে বিএসএফকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

ঘটনাস্থলে সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে মিটিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরেজমিনে উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান এই বিজিবি কর্মকর্তা।

 

উল্লেখ্য: ৭ জানুয়ারি রাতেও উপজেলার ধবলসুতি সীমান্তে ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের চেষ্টা করে বিএসএফ। পরে বিজিবির বাধার মুখে সেটি সরিয়ে নেয়া হয়। তারও আগে ১ জানুয়ারি পাটগ্রামের দহগ্রাম ইউনিয়নের সরকারপাড়া সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া ও ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের চেষ্টা করলে বিজিবির প্রতিবাদ ও বাধার মুখে সেখান থেকেও ফেরত যায় বিএসএফ ও ভারতীয় নির্মাণ শ্রমিকরা।