
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি প্রদর্শনীতে ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ নামে যে ম্যাপ প্রকাশ করা হয়েছে তাতে ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামের তুরস্কভিত্তিক একটি সংগঠন বা গোষ্ঠী জড়িত বলে অভিযোগ তুলে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও ঘটনাবলি ভারত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর।
শুক্রবার (১ আগস্ট) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ভারতের লোকসভার চলমান বর্ষাকালীন অধিবেশনে একজন সংসদ সদস্য জয়শঙ্করের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামের একটি তথাকথিত ইসলামপন্থি গোষ্ঠীকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত একটি প্রদর্শনী প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে জবাবে তিনি একথা বলেন।
উক্ত সাংসদ দাবি করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামক গোষ্ঠী একটি ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ মানচিত্র উপস্থাপন করেছে, যেখানে ভারতের একাধিক রাজ্যকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই গোষ্ঠী তুরস্কভিত্তিক একটি এনজিও, ‘তার্কিশ ইউথ ফেডারেশন’-এর মদতপুষ্ট বলে বিভিন্ন সূত্রে দাবি উঠেছে।
জয়শঙ্কর এই প্রশ্নের উত্তরে জানান, ‘টার্কিশ ইয়ুথ ফেডারেশন’ নামক তুরস্কের একটি এনজিও-র সমর্থন রয়েছে ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ সংগঠনের পিছনে। তুরস্কের একটি এনজিও সমর্থিত সালতানাত-ই-বাংলা নামক একটি ইসলামিক গ্রুপ ঢাকায় গ্রেটার বাংলাদেশের ম্যাপ প্রকাশ করেছিল, যেখানে ভারতের অংশকেও বাংলাদেশের বলে দাবি করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ম্যাপ প্রদর্শিত হয়েছিল। সরকার এই বিষয়টির নোট নিয়েছে।
জয়শঙ্কর বলেন, আমরা বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তুলেছি। তারা আমাদের জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ১৪ এপ্রিল, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ঐতিহাসিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মধ্যযুগীয় বাংলার একটি মানচিত্র প্রদর্শিত হয়, যা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটেই তুলে ধরা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আয়োজকেরা বাংলাদেশ সরকারকে আশ্বস্ত করেছেন যে এর সঙ্গে কোনো বিদেশি সংস্থা বা উগ্র গোষ্ঠীর সম্পৃক্ততা নেই। বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে ‘সালতানাত-ই-বাংলা’ নামে কোনো সংগঠন বা গোষ্ঠীর অস্তিত্ব দেশে নেই। এই বিষয়ে সরকারি ফ্যাক্টচেক প্ল্যাটফর্ম বাংলাফ্যাক্ট-এর তথ্য ব্যবহার করে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে।
জয়শঙ্কর লোকসভায় তার বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আমাদের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। এই কারণে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এবং সংশ্লিষ্ট ঘটনাগুলোর ওপর আমরা নিবিড় নজর রাখছি। আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় সতর্ক ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।