Image description
 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তি এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলদাদপুরে হিন্দুপল্লিতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) আসামিদের রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গঙ্গাচড়া আমলি আদালতে পাঁচ আসামিকে হাজির করা হয়। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় তা শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন। পরে ওই পাঁচজনকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের কোর্ট ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম।

 

হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিকেলে ভুক্তভোগী রবীন্দ্রনাথ রায় বাদী হয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানায় মামলা করেন। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা প্রায় ১২০০ জনকে আসামি করা হয়। পরে মঙ্গলবার গভীর রাতে নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে যৌথবাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে।

 
 

গ্রেপ্তাররা সবাই নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে রয়েছেন, নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ সিঙ্গেরগাড়ি মাঝাপাড়া গ্রামের লাভলু মিয়ার ছেলে ইয়াসিন আলী (২৫), একই উপজেলার মাগুরা ধনীপাড়া গ্রামের নুর আলমের ছেলে মোহাম্মদ স্বাধীন মিয়া (২৮), দক্ষিণ চাদখানা মাঝাপাড়া গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে আশরাফুল ইসলাম (২৮), উত্তর সিংগের গাড়ি পাঠানপাড়া গ্রামের বাবুল খানের ছেলে এমএম আতিকুর রহমান আতিক (২৮) এবং সিঙ্গের গাড়ি চাওড়া পাড়া গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন সেলিম (২২)।

 

শনিবার (২৬ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে এক কিশোরের আপত্তিকর পোস্টকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সেদিন সন্ধ্যায় তাকে আটক করে পুলিশ। পরদিন কিশোরটির বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কিশোর পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

এ ঘটনার জেরে রোববার বিকেলে গঙ্গাচড়ার বেতগাড়ি ইউনিয়নের আলদাদপুর গ্রামে হিন্দু পাড়ায় হামলা চালিয়ে ১৫টি বাড়ি ভাঙচুর করেছে উত্তেজিত জনতা। এ সময় তাদের হামলায় এক পুলিশ সদস্য আহত হন।

গত মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির ভাঙা টিনে খুলে সেখানে নতুন টিন লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। এ গ্রামের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদ হাসান মৃধা জানান, ‘১৫ বান্ডিল টিন, ৩০ বস্তা শুকনো খাবার, ২০টি মাটির চুলা ও চারটি টিউবওয়েল মেরামত করে দেওয়া হয়েছে। ঘর মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা আমরা দিচ্ছি।’