Image description

এক সময়ের অভাবী রিকশাচালকের ছেলে রিয়াদ। দিন চলে টেনেটুনে, মাথার উপর ছিল টিনের ছাউনি। কিন্তু এখন? নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ঘুনসী গ্রামে তার পরিবার নির্মাণ করছে চার কক্ষবিশিষ্ট পাকা ভবন। সেই ঘরটি ঘিরে এখন জল্পনা-কল্পনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে পুরো গ্রাম।

সবচেয়ে চাঞ্চল্যের বিষয়—রাজধানীর গুলশানে সাবেক এক সংসদ সদস্যের বাসায় চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন রিয়াদ। আর তার আগেই শুরু হয় এই পাকা ভবনের নির্মাণ। গ্রামে এখন প্রশ্ন উঠেছে—এই উত্থান হঠাৎ কীভাবে?

রিয়াদের প্রতিবেশী এক প্রবীণ বলেন, “ওদের পরিবারে কোনো দিন অভাব ছাড়া কিছু দেখিনি। হঠাৎ করে পাকা বিল্ডিং! আবার শুনি, রিয়াদ ঢাকায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় ধরা পড়েছে।”

অন্য একজন জানান, “তার বাবা আবু রায়হান আর বড় ভাই আগে রিকশা চালাতেন। এখন আর চালান না। কয়েক মাস ধরে তাদের লাইফস্টাইল পুরোপুরি বদলে গেছে—নতুন মোটরসাইকেল, দামি জামাকাপড়, নিয়মিত ঢাকায় যাওয়া-আসা।”

পরিবারের দাবি, বাড়িটি তৈরি হচ্ছে জমানো টাকা, কিছু অনুদান এবং ঋণ নিয়ে। তারা বলছে, গ্রেপ্তারের ঘটনাটি তাদের পরিবারের জন্য অপ্রত্যাশিত এবং তা রাজনীতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে।

রিয়াদের এক সাবেক সহপাঠী জানান, “সে খুব মেধাবী ছিল। স্থানীয় কিছু বিত্তবান ব্যক্তি তার লেখাপড়ার খরচ দিতেন। মজিব কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকার একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। তবে সাম্প্রতিক পরিবর্তন আমাদের সবাইকে অবাক করেছে।”

সেনবাগ থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “৫ আগস্টের পর রিয়াদ এলাকায় এসেছিলেন বলে শুনেছি। তিনি বিভিন্ন জায়গায় লিফলেট বিতরণ করেছেন এবং তার বেশ কিছু ছবি রয়েছে উচ্চপদস্থ লোকজনের সঙ্গে।”

তিনি আরও জানান, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে তদন্ত হবে।

রিয়াদের উত্থান একদিকে অনুপ্রেরণা হতে পারত, যদি না তার নাম উঠে আসত বিতর্কিত মামলায়। এখন পরিস্থিতি ঘোলাটে। তার পরিবার রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কথা বলছে, আর এলাকা জুড়ে চলছে কানাঘুষা।

শীর্ষনিউজ